নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের চাপারডাঙ্গী গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলার ঘটনায় ৩ নারীসহ ৪ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। চাপারডাঙ্গী গ্রামের মৃত দাউদ আলী সরদারের ছেলে এমদাদ হোসেন বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৭ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় গত ২৭ মার্চ (বুধবার) রাতে এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আলীপুর ইউনিয়নের চাপারডাঙ্গী গ্রামের মালেকের ছেলে সুমন (৩৫) ও লাল্টু (৪৩), একই গ্রামের মৃত মোসলেম আলী সরদারের ছেলে বাবু (৪০), মনি (৪২), এনামুল (৩২), জিয়া (৩৫), আনজারুল (৬০) ও আরিজুল (৫৫) নামীয় উক্ত আসামীগণ অত্যন্ত হিং¯্র প্রকৃতির। তারা জমি-জমা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিগত প্রায় ১৩ বছর যাবত কারনে-অকারনে একই এলাকার এমদাদ হোসেন এর সাথে গায়ে পড়ে বিভিন্ন ধরনের গোলযোগ করে আসছে। এরই জেরে উক্ত আসামীগণ চলতি বছরের গত ২২ মার্চ আনুমানিক বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুনরায় অহেতুক এমদাদ হোসেনসহ তাদের পরিবারের লোক জনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং পরিকল্পিত ভাবে ধারালো দাঁ, লোহার রড, জিআই পাইপ, বাশের লাঠি ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রতিপক্ষ এমদাদ ও তার পরিবারকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। আসামীগণ লোহার রড দিয়ে এমদাদকে বেধরক মারপিট করার সময় তার স্ত্রী মোছাঃ নাজমা খাতুন (৪০) এসে আসমীগণকে বাধা প্রদান করলে, উক্ত ১নং আসামী এমদাদের স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার হাতে থাকা ধারালো দাঁ দিয়ে মাথার সম্মুখ ভাগে আঘাত করে। উক্ত আঘাতে তার স্ত্রীর মাথায় মারাত্মক কাটাফোলা রক্তাক্ত ক্ষত জখম হয় (মাথায় ৪টা সেলাই রয়েছে)। ২নং আসামী ও অজ্ঞাতনামা আসামীগণ লোহার রড দিয়ে এমদাদের স্ত্রী নাজমা খাতুনের সমস্ত শরিরে বেধরক মারপিট করে গুরতর নীলাফোলা জখম করে এবং স্ত্রীর বাম হাতের অনামিকা আংগুলে মারাত্মক হাড়ভাঙ্গা জখম করে। এবং ৪নং আসামী এমদাদের স্ত্রীর পরনের কাপড় চোপড় টানা হেচড়া করে তার শ্লীলতাহানী ঘটায়। এসময় তার স্ত্রী নাজমা অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে উক্ত ৫নং আসামী তার গলায় থাকা ৮ আনা ওজনের একটি সোনর চেইন যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৪০,০০০ (চল্লিশ হাজার) টাকা জোর পূর্বক কেড়ে নেয়। এসময় এমদাদের কন্যা মোছাঃ রুমি খাতুন (১১) আসামীগণকে বাধা প্রদান করলে আসামীগণ তাকেও বেধরক মারপিট করে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোলা জখম করে। এছাড়াও এমদাদের ভাবী মোছাঃ আনোয়ারা (৬০) এর কোলে থাকা এমদাদের দুই বছরের শিশু পুতিœ সুমাইয়া খাতুনকে ৩নং আসামী টেনে হিচড়ে নিয়ে নির্মম ভাবে মাটিতে ছুড়ে ফেলে দেয়। অতঃপর এমদাদের পরিবারের ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে আসামীগণের হাত থেকে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করেন এবং এমদাদের স্ত্রী নাজমাকে ইজিবাইক যোগে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। এসময় আসামীগণ সাক্ষী অহিদুল, সিরাজুল ও কামরুলের সামনেই পরবর্তীতে এমদাদের পরিবারকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি ধামকিসহ ক্ষয়ক্ষতি করে প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইমামুল ইসলাম মামলা রেকর্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আসামীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।