Spread the love

এসভি ডেস্ক: বিয়ের প্রলোভনে ঘরভাড়া রেখে ২ বছর ধরে হোটেলের রাধুনিকে ধর্ষণ এবং তার নিকট থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা কৌশলে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা শহরের নিউ মার্কেট এলাকার নিউ আব্বাস হোটেলের মালিক হযরত আলীর বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় ভিকটিম সাতক্ষীরা শহরের দক্ষিণ কাটিয়া এলাকার ওই নারী সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে হযতে আলীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত পিবিআই সাতক্ষীরাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

অভিযুক্ত হযরত আলী(৩৫) সাতক্ষীরা সদরের ফয়জুল্যাপুর গ্রামের সুরত আলীর ছেলে।

ভিকটিম ওই নারী(৩৭) বলেন, ‘তিন বছর আগে হযরত আলী শহরের নিউ মার্কেট এলাকায় মেসার্স নিউ আব্বাস হোটেল এন্ড বিরিয়ানী হাউজ নামে নিউ মার্কেট মোড় এলাকায় ব্যবসা শুরু করেন। তখন আমি সেখানে রাধুনির কাজ শুরু করি। সারাদিন কাজের সুবাদে হোটেল মালিক হযরত আলী বিভিন্ন সময় আমার সাথে কথা বলতেন। এক পর্যায়ের তার কুদৃষ্টি পড়ে আমার দিকে। তখন তিনি আমাকে অনৈতিক প্রস্তাবও দেন। আমি তাতে রাজি না হলে আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখান। এক পর্যায়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শহরের কামালনগরে বাসা ভাড়া নিয়ে আমাকে সেখানে রাখেন এবং যাতায়াত শুরু করে শারীরিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখেন। আমি তাকে বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকলে নানান অজুহাতে তিনি এড়িয়ে যেতে থাকেন। এরই মধ্যে আমার কাছে থাকা ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা স্ট্যাম্পে লিখিত পড়িত করে এক মাসের জন্য ধার নেন।’

এক পর্যায়ে ওই বাসায় এক বছরের অধিক সময় থাকার পর যখন আমি জোরালোভাবে বিয়ে এবং টাকা ফেরতের জন্য চাপ সৃষ্টি করি। তখন তিনি সব সম্পর্ক অস্বীকার করেন এবং টাকা নেয়নি বলে সাফ জানিয়ে আমাকে হোটেল থেকে তাড়িয়ে দেন। এক পর্যায়ে আমি অসহায় হয়ে বাংলাদেশ রেস্তোরা মালিক সমিতি সাতক্ষীরা শাখায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। সেখানে তিনিসহ তার লোকজন উপস্থিত হয়ে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও কোন সুরাহা করেননি। ওই ঘটনার পর আমি কোন উপায়ান্তর না পেয়ে চলতি বছরের ৩ অক্টোবর সাতক্ষীরার নারি ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে হযরত আলীকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করি। বর্তমানে পিবিআই সাতক্ষীরা মামলাটি তদন্ত করছেন।

এসব ঘটনায় সাতক্ষীরা জেলা রেস্তোরা মালিক সমিতির সভাপতি শাহ আলম বলেন, ‘হযরত আলীর বিরুদ্ধে ওই নারী সংগঠনে অভিযোগ করলে আমরা হযরত আলীকে সংগঠনের কার্যালয়ে ডেকে উভয় পক্ষকে ডেকে মোনাবোঝা করি। সেখানে হযরত আলী ওই নারির সাথে অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার করে এবং টাকা দিয়ে মিটমাট করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু নির্যাতিত নারি রাজি না হওয়ায় সেখানে মিটমাট হয়নি।’

সাতক্ষীরা জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘আমাদের শ্রমিক সংগঠনের একজন নারী শ্রমিকের সমস্যা নিয়ে কথা বলা বা দেখা শুনা করায় হযরত ও তার লোকজন আমাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন। বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে আমরা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা দ্রুত মানববন্ধন করে লম্পট হযরতের গ্রেপ্তার দাবী করবো।’

তবে অভিযুক্ত হযরত আলী উপরোক্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’
পিবিআই সাতক্ষীরার এসআই ও মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সোহান হোসেন বলেন, ‘মামলাটির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *