নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরটিই যেন শাকিরনের (৬০) জীবনে সেরা প্রাপ্তি। তাইতো ঘর পেয়ে তার কথায় যেমন ছিল আবেগ তেমনি ছিল প্রাপ্তির সুখ। ঘর পেয়ে শাকিরন বলছিলেন ‘প্রধানমন্ত্রী’ আমারে কত সুন্দর ঘর দিছে! এমন ঘর আমি জীবনেও করতে পারতাম না। এখন আমার আর কোন চিন্তা নেই। জামাই-মেয়ের সাথে নদীর চরে আর আমাকে থাকতে হবেনা। নতুন এই ঘরে আমি শান্তিতে থাকতে পারবো। আমার মতো সুখি এখন আর কেউ নেই।’
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রদত্ত জমি ও ঘর পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে এসব কথা বলছিলেন সাতক্ষীরা সদরের ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের মাছখোলা গ্রামের শাকিরন খাতুন।
শাকিরন খাতুন আরো বলেন, ‘অনেক ছোটকালে আমার হাড়দ্দাহ এলাকায় বিয়ে হয়। সেখানে আমার একটি মেয়ে জন্মগ্রহণ করে। বিয়ের ৪/৫ বছর পর স্বামী কলেরায় মারা যায়। মেয়েটাকে নিয়ে চলে আসি মাছখোলা গ্রামে বাবার বাড়িতে। বাবাও থাকতেন অন্যের জমিতে। বাবার ঘরের পাশে একটি ঝুপড়ি ঘরে মেয়েকে নিয়ে থাকতাম আমি।
এরপর মেয়ে বড় হলে বিয়ে দেই। তারা থাকতো নদীর চরে। ইতিমধ্যে বাবা-মা দুজনেই মারা যায়। আমি আশ্রয় নেই মেয়ে-জামায়ের বাড়িতে। সেখানেও থাকতে হতো বারান্দায়। আমার এই জীবনে ভাল একটি ঘরে আমি কোনদিন থাকতে পারিনি। একদিন টিভিতে দেখে আমি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবুকে বলেছিলাম, ম্যা ভাই, ‘আমাকে যদি এমন একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দিতিস তাহলে আমার কষ্টটা দূর হতো।’
তখন উপজেলা চেয়ারম্যান আমাকে ভূমিহীন সার্টিফিকেটসহ আরো কাগজপত্রসহ আবেদন করতে বলে। তার কথামতো আমি আবেদন করেছিলাম। গতকাল জমি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে। কাল আমার সেই ঘরটি আমি দেখে এসেছি। ঘরটি অনেক সুন্দর। ঘরটি দেখার পর থেকে অনেক ভাল লাগছে। আর আজ ঘরের কাগজ পেয়ে আরো ভাল লাগছে।’
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইয়ারুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প ২ এর চতুর্থ ধাপে শাকিরন খাতুনসহ সাতক্ষীরা সদরের ধূলিহর ও ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের ৩৯ জনকে দেওয়া হয়েছে ২ কাঠা জমিসহ ঘর। এখন পর্যন্ত সাতক্ষীরা সদরে ৫৬৪টি ঘরের মধ্যে ৫২৪টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার(২২ মার্চ) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশের ন্যায় সাতক্ষীরা সদরের ঘর হস্তান্তর উদ্বোধন করেন।