Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া সরকার পাড়া এলাকার গৃহবধূ রেখা রানী মল্লিক (৩২)। সন্তান গর্ভে যাওয়ার পর থেকে তিনি চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ নিয়েছিলেন সাতক্ষীরা শহরের সরকারী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে। সন্তান জন্মদানের সময়েও তিনি এসেছিলেন মা ও শিশূ কল্যাণ কেন্দ্রে। তবে প্রথমবার নরমাল এ সন্তান জন্ম দিতে পারেননি। ফলে তিনি কোন প্রকার খরচ ছাড়াই সিজারিয়ান অপারেশন করেছিলেন মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে। দ্বিতীয় সন্তান গর্ভে যাওয়ার পর থেকে তিনি আবারও মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ গ্রহণ করেন। গতমাসে সন্তান জন্মদানের জন্য তিনি আবারও এসেছিলেন মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে। তবে এবার আর সেখানে তিনি সিজারিয়ান অপারেশন করাতে পারেননি। এনেসথেসিয়া ডাক্তার না থাকায় সাতক্ষীরার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ডাক্তার তাকে অন্য হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন করতে বলেন। ফলে বাধ্য হয়ে তাকে শহরের অদূরের একটি হাসপাতালে অনেক খরচে সিজারিয়ান অপারেশন করতে হয়েছিল। এছাড়া সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নরমাল ডেলিভারী করাতে সাহস পাচ্ছেননা অভিভাবকরা। কারণ নরমাল ডেলিভারীর সময় কোন জটিলতা সৃষ্টি হলে সাথে সাথে গর্ভবতী মায়ের সিজারিয়ান অপারেশন করা না হলে মা ও শিশুর জীবনের ঝুঁকি থাকে। শিখা রানী মল্লিকের মতো প্রতিদিন সাতক্ষীরার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে এসে সিজারিয়ান অপারেশন করতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন অসংখ্য গর্ভবতী মা।

সাতক্ষীরার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, এ বছরের ১ জানুয়ারী এনেসথেসিয়া ডাক্তার মুজিবুর রহমান অবসর গ্রহণ করেন। সেখান থেকে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে এনেসথেসিয়া ডাক্তারের পদটি শূন্য হয়। সেখান থেকে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ হয়ে যায়। গত বছর এনেসথেসিয়া ডাক্তার জিএম মুজিবুর রহমান কর্মরত থাকাকালীন সময়ে সাতক্ষীরার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে সিজারিয়ান অপারেশন করা হয় ৭০ জন গর্ভবতী মাকে। শুধুমাত্র গত বছরের ডিসেম্বরে এখানে সিজারিয়ান অপারেশন করা হয় ১৯ জনকে। আর গত বছর নরামাল ডেলিভারী করানো হয় ৫০ জনকে। এছাড়া সাতক্ষীরার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ২০১৯ সাল থেকে ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার ভিজিটর(এফ ডব্লিউ ভি) এর পদটি শূন্য থাকায় মা ও শিশুদের চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।

সাতক্ষীরার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার(ক্লিনিক) ডা. লিপিকা বিশ্বাস বলেন, এনসথেসিয়া ডাক্তার না থাকায় বর্তমানে এখানে সিজারিয়ান অপারেশন হচ্ছেনা। বিষয়টি আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা অতিদ্রুত এখানে একজন এনেসথেসিয়া ডাক্তার দেবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। এনেসথেসিয়া ডাক্তার আসলে এখানে সিজারিয়ান অপারেশন হবে এবং অনেকেই উপকৃত হবেন।

তিনি আরো বলেন, এই হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ থাকলেও জন্ম নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত সেবা এবং মা ও শিশুর অন্যান্য সেবা কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

সাতক্ষীরা জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের নবাগত উপ-পরিচালক দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। বিষয়টি সম্পর্কে এখনও আমার জানা নেই। বিষয়টি সম্পর্কে জেনে আমি বিস্তারিত উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো এবং অতিদ্রুত যাতে এনেসথেসিয়া ডাক্তার ও এফডব্লিউভি সাতক্ষীরার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে পদায়ন করা হয় তার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *