Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা সদরের কুশখালী ইউনিয়নের মক্তব মোড় এলাকার মাদক, গরু ও চোরাই মালামাল পাচিং ম্যান হাসানুর ওরফে মান্দুলী বিএসএফ এর গুলিতে নিহত হয়েছেন। মান্দুলী নিহত হবার পর থেকে গাঁ ঢাকা দিয়ে পালিয়ে আছেন কুশখালী এলাকার মাদক ও চোরাকারবার সিন্ডিকেটের মূল গডফাদাররা। এছাড়া একই এলাকার মান্দুলীর সহকর্মী রিয়াজ ভারতে যেয়ে এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। রিয়াজ নিখোঁজ হবার পরও বেশ কিছুদিন যাবত গাঁ ঢাকা দিয়ে পালিয়ে ছিলেন মাদক ও চোরাকারবার সিন্ডিকেটের ওই গডফাদাররা। পরে পরিবেশ শান্ত হলে আবারও বাড়িতে ফেরেন তারা। বিএএসএর গুলিতে মান্দুলি নিহত হবার পর এই মাদক সিন্ডকেটের গডফাদাররা আবারি গাঁ ঢাকা দিয়েছেন। ইতিমধ্যে বন্ধ করে রেখেছেন তাদের মোবাইল নম্বর।

মান্দুলী নিহত হবার পর সরেজমিনে কুশখালী এলাকায় গেলে স্থানীয়রা বলেন, ‘মাস খানেক আগে কুশখালী মক্তব মোড় এলাকার কানা আনসারের ছেলে মাদক ও চোরাই মালামাল পাচিং ম্যান রিয়াজ খৈতলা সীমান্ত দিয়ে মান্দুলীসহ আরো কয়েকজনের সাথে ভারতে যান। এরপর মান্দুলীসহ অন্যরা বাড়িতে ফিরলেও নিখোঁজ রয়েছেন রিয়াজ। তার সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি। গত রোববার ভোরে খৈতলা সীমান্তে বিএসএফ এর গুলিতে আহত হন একই এলাকার হায়দার আলীর ছেলে হাসানুর রহমান ওরফে মান্দুলী(২৫)। পরে খুলনা মেডিকেলে নেওয়ার পথে মারা যান মান্দুলী।’

স্থানীয়রা আরো বলেন, ‘রিয়াজ ও মান্দুলী ছিলেন মাদক, গরু ও চোরাকারবারের পাচিংম্যান। মান্দুলীর নামে রয়েছে ২ টি মাদকের মামলা। এছাড়া মাদক, গরু ও চোরাকারবারের পাচিংম্যান হিসেবে রিয়াজ ও মান্দুলির সাথে কাজ করেন মক্তবমোড় এলাকার আশরাফ আলীর ছেলে পিচ্ছি রাজু, শাহজানের ছেলে আরিফুল, হবিবরের ছেলে ইয়ারুল, গোলামের ছেলে জাহিদসহ মিন্টু, জাহাঙ্গীর, ইমরান, ধলু, খোকাসহ আরো অনেকে। মান্দুলী নিহত হবার দিনও তারা মান্দুলীর সাথে ছিলেন এবং গুলিবিদ্ধ মান্দুলীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।’

মাদকের গডফাদারদের নাম উল্লেখ করে স্থানীয়রা আরো বলেন, ‘মান্দুলী-রিয়াজ গংদের পাচিংম্যান হিসেবে ব্যবহার করেন কুশখালী ছয়ঘরিয়া এলাকার মাসুদ ঢালীর ছেলে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক, চোরাকারবারের গডফাদার তৌহিদ, মৃত বাবু মোল্লার ছেলে সোহাগ, ছয়ঘরিয়া মাঠপাড়া এলাকার মৃত শহিদুল মোল্লার ছেলে জাহাঙ্গীর, মক্তব মোড় এলাকার আতিয়ার ঢালীর ছেলে লম্বা আমান। চুনোপুটিরা বারবার ক্ষতিগ্রস্থ হলেও সবসময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান মাদকের এই সকল গডফাদাররা। মান্দুলী নিহত হবার পর থেকে এই সকল মাদকের গডফাদাররা গাঁ ঢাকা দিয়ে পালিয়ে আছেন।

স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধি ও নেতাদের ছত্রছায়ায় তহিদ, সোহাগ, আমান ও জাহাঙ্গীররা কুশখালী এলাকাকে মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। রিয়াজ, মান্দুলীদের মতো ছেলেদের ব্যবহার করে এই সকল মাদকের গডফাদাররা ইতিমধ্যে হয়েছেন কোটিপতি, গড়ে তুলেছেন আলিশান বাড়ী, কিনেছেন জমি। প্রশাসনের কিছু ভাল কর্মকর্তার অভিযানে মাঝে মাঝে কিছু মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারী আটক হলেও প্রশাসনের কিছু অসৎ কর্মকর্তার কারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান অধিকাংশ মাদকের গডফাদাররা। আর তাদের এসব কাজ দেখে ও শুনেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননা। ফলে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে তারা। আর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আমাদেও এলাকার যুব সমাজ।’ অনতিলম্বে এই সকল মাদক ও চোরাকারবারের গডফাদারদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

কুশখালী ক্যাম্পের ইনচার্জ শামীম বলেন, আমি নতুন এই ক্যাম্পে যোগদান করেছি। আমার ক্যাম্পের আওতাধীন থেকে মাদক ও চোরাকারবারের সাথে যুক্ত থাকবে এটা আমি হতে দেবনা। ইতিমধ্যে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে। হয় এই এলাকায় আমি থাকবো আর না হয় মাদক ব্যবসায়ীরা থাকবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *