নিজস্ব প্রতিনিধি: জলবায়ু পরিবর্তন ও বারবার প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষত বিক্ষত সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলীয় এলাকা। নদী থেকে লোনা পানি তুলে দীর্ঘদিন চাষের জমিতে বাগদা চিংড়ি চাষ করায় মাটির লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ফলে বিগত প্রায় ৩০ বছর সাধারণত ধানসহ কোন ফসল হতো না। লবনাক্ত ওই এলাকার জমিতে যে সোনার ধান ফলবে এটা কখনও কল্পনাই করেনি এই এলাকার মানুষ। তবে সেই কল্পনা এখন বাস্তবে পরিণত হয়েছে। এই এলাকায় ফলছে সোনার ধান। বিনা ১০ ধান চাষে এখন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন উপকূলীয় এলাকার কৃষকরা।
শ্যামনগরের আটুলিয়া এলাকার কৃষক আবদুল আজিজ, কেশব চন্দ্র মন্ডল, কবিতা রানি মন্ডলসহ অনেক কৃষক জানান, আমাদের এলাকায় কখনও ধান হবে এটি কল্পনাও করিনি। এবার লবণ সহিষ্ণু বিনা-১০ ধান চাষ করেছি। ফলন ভাল হয়েছে। আগামীতে এই ধান আরো বেশি পরিমাণ জমিতে চাষ করার ইচ্ছা আছে।
বিনা সাতক্ষীরা সাব স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার ড. বাবুল আকতার জানান, ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম স্যার এখন পর্যন্ত ধানের উল্লেখযোগ্য জাতসমূহ লবণাক্ততা সহিষ্ণু বিনাধান-৮ ও বিনাধান-১০, জলমগ্নতা সহিষ্ণু বিনাধান-১১ ও বিনাধান-১২, সার ও পানি সাশ্রয়ী উচ্চ ফলনশীল জাত বিনাধান-১৭ (গ্রীন সুপার রাইস), দ্বৈত (বন্যা ও লবণ) সহিষ্ণু বিনাধান-২৪ সহ অন্যান্য ফসলের মোট ২২টি উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছেন। তন্মধ্যে বিনা-১০ ধান অন্যতম। এই ধান লবনাক্ততা সহ্য করতে পারে। ফলে উপক’লীয় এলাকায় এটি অপার সম্ভাবনাময় ধান হিসেবে ইতিমধ্যে পরিচিতি পেয়েছে।
এদিকে শ্যামনগরে পরীক্ষামুলকভাবে বিনা ধান-১০ জাতের চাষে কৃষকদের সফলতা দেখতে রোববার কৃষকের ক্ষেতে চলে আসেন বিনা ধান-১০ এর উদ্ভাবক ও বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা ইউনিস্টিটিউট (ময়মনসিংহ) বিনা’র মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম।
পরে মাঠ দিবসে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি। শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক (খুলনা অঞ্চল) ফজলুল হক, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (খামারবাড়ি), সাতক্ষীরার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নুরুল ইসলাম, শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন, উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বিনা, পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উপকেন্দ্র, সাতক্ষীরার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. বাবুল আক্তার প্রমূখ।