নাজমুল শাহাদাৎ জাকির: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ভেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় সাতক্ষীরার উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকা। সেসব এলাকার অনেক গ্রাম এখনো পানির নিচে। মানুষ মারা গেলে দাফনের জায়গাটুকুও অবশিষ্ট নেই।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মাহমুদুল হাসান নামের এক যুবক মারা যাওয়ার পর দাফন করতে বিড়ম্বনায় পড়েন পরিবার। অবশেষে ইটের তৈরী কংক্রিটের কবরে সমাহিত করা হয়েছে তাকে।
মাহমুদুল হাসান (৩৪) আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর গ্রামের শহিদুল ইসলাম গাজীর ছেলে। তিনি একটি ওষধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার সকালে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মাহমুদুল হাসান।মৃতের স্বজনরা জানান, ইয়াসের প্রভাবে ভেঙে যাওয়া ভেড়িবাঁধ ভেঙে এখনো লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। গ্রামের উপর দিয়ে জোয়ারভাটা বয়ে যায়। কবরস্থানগুলোও পানির নিচে। উপায় না পেয়ে বিকেলে আল আমিন মহিলা আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাসুম বিল্লাহ গাজীর বাড়ির সামনের রাস্তায় জানাজা নামাজ শেষে বিকল্প উপায়ে দাফন করা হয়। পারিবারিক কবরস্থানে কবর না খুঁড়ে ইট দিয়ে কবর তৈরী করে উপরে পলিথিন দিয়ে মাটির পরিবর্তে কংক্রিটের কবরে তাকে দাফন করা হয়েছে।
প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জানান, এ অঞ্চলের মানুষের চরম দুর্দিন। কেউ মারা গেলে দাফন করার জায়টুকুও নেই। এখনো ভেঁড়িবাঁধ ভাঙা রয়েছে। গ্রামের মধ্য দিয়ে জোয়ারের পানি উঠানামা করছে। মানুষ মারা গেলে কংক্রিটের কবর তৈরী করে দাফন করতে হচ্ছে। এত সীমাহীন কষ্ট ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়।
আশাশুনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অসীম বরণ চক্রবর্তী বলেন, বাঁধ মেরামত করা না গেলে এসব এলাকায় মানুষ আর বসবাস করতে পারবে না। বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়েছে উপকূলীয় এলাকা। মানুষ মারা গেলে দাফন করতে হচ্ছে বিকল্প উপায়ে। এর থেকে কষ্টের কিছু হতে পারে না।