Spread the love

নাজমুল শাহাদাৎ জাকির: তিন মেয়ের পর আবারও মেয়ে জন্ম গ্রহণ করায় স্বামীর হুমকিতে ৮ দিন বয়সী নবজাতককে হত্যার পর পুকুরের পানিতে ফেলে দিয়েছেন মা শ্যামলী ঘোষ। পরে পানিতে নবজাতকের লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশেকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় মা শ্যামলী ঘোষ(৩৫)কে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১ জুন) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামের একটি পুকুর থেকে ওই নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শ্যামলী ঘোষ রায়পুর গ্রামের মানিক ঘোষের স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, গত ২৫ মে রাতে মানিক ঘোষ ও শ্যামলী ঘোষ দম্পতির একটি মেয়ে সন্তান হয়। এর আগে তাদের ঘরে জন্ম গ্রহণ করে আরো তিনটি মেয়ে। স্বামী মানিক ঘোষের প্রত্যাশা মতো ছেলে না হয়ে আবারও মেয়ে হওয়ায় পরদিন মানিক ঘোষ বাড়ির কাউকে কিছু না বলে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়।

ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন….

এরপর ৩১ মে সোমবার রাতে নিজ বাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় মায়ের কাছ থেকে নবজাতক শিশুটিও হারিয়ে যায় বলে এলাকায় প্রচার হয়। পরদিন মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি প্রচার হলে পরিবারসহ গ্রামের লোকজন সম্ভাব্য সব জায়গায় শিশুটিকে ব্যাপক খোঁজাখুঁজি শুরু করে। তবে কোন সন্ধান না পেয়ে স্থানীয়রা বিষয়টি পুলিশকে জানায়। এরপর রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ির পুকুরে শিশুটির লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা থানা পুলিশ খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বিকাশ মন্ডল বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। শিশুটি হারিয়ে যাওয়ার খবরে আমরা দিনব্যাপী ব্যাপক খোঁজাখুজি করেছিলাম। তবে পায়নি। সর্বশেষ রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ির পুকুরে তার লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

খলিলনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান লিটু বলেন, ঘটনাস্থলে চৌকিদারকে পাঠানো হয়েছিল। চৌকিদার ফিরে এসে জানিয়েছেন শ্যামলী ঘোষের স্বামী মানিক ঘোষ বলেছেন, ‘তিন মেয়ের পর আবার মেয়ে হয়েছে। ওই মেয়েকে মেরে না ফেললে তোকে(শ্যামলী ঘোষকে) আমি বাড়িতে রাখব না। এজন্য স্বামীর কথামতো নবজাতকটিকে মেরে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয় শ্যামলী ঘোষ।’ পরে রাতে পুলিশ নবজাতকটির মরদেহ উদ্ধার করে।

তালা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, নবজাতক হত্যার ঘটনায় নবজাতকের মা শ্যামলী ঘোষকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

By S V

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *