Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি: সরকারী ভাবে মধু আহরণের অনুমতি দেওয়ার আগেই মাছ ও কাঁকড়া ধরার অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে এক শ্রেণীর জেলেরা মধু আহরণ শুরু করেছে। ফলে শুন্য হতে চলেছে মধুর চাক। হতাশ হচ্ছেন প্রকৃত মৌয়ালরা।

সুন্দরবনের খলিসা ফুলেরে মধু সর্ব মহলে সমাদৃত হওয়ায় অনুমতির আগেই এই অপতৎপরতা শুরু করেছেন কিছু অসাধু জেলে।

জানা যায়, প্রতিছর ১ এপ্রিল সরকারীভাবে মধু আহরণের অনুমতি প্রদান করা হয়। ওই সময় বন বিভাগ থেকে অনুমতি নিয়ে প্রতি নৌকায় ৫ থেকে সর্বোচ্চ ১০ জন অবস্থান করে সুন্দরবনে ১৫ দিন থাকতে পারবেন। এসময় জনপ্রতি ৫০ কেজি মধু আহরণ করতে পারবেন এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে অতিরিক্ত মধু আহরণের জন্য বাড়তি রাজস্ব দিতে হয় মৌয়ালদের। গত বছর মধু আহরণের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ১ হাজার ৫০০ কুইন্টাল। প্রতি কুইন্টাল মধু আহরণের জন্য ৭৫০ টাকা, প্রতি কুইন্টাল মোমের জন্য ১০০০ টাকা রাজস্ব নির্ধারণ ছিল।

দাতিনাখালী গ্রামের মনোরঞ্জন মুন্ডা বলেন, গতবার লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌছাতে পারেনি আমরা। মধু আহরনের সময় নৌকায় ১০ জন মৌয়াল অবস্থান করতে পারে একটি নৌকা মধু আহরণের জন্য প্রস্তুত করতে খরচ হয় লক্ষাধিক টাকা। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী মধু আহরণ করতে না পারলে মহাজনের নিকট থেকে নেওয়া টাকা দিতে হিমশিম খেতে হয়।

গাবুরার পাশ্বেমারী এলাকার মৌয়াল বেলাল হোসেন বলেন, সরকারী ভাবে মধু সংগ্রহের অনুমতির আগেই এক শ্রেণীর জেলে সুন্দর বনে প্রবেশ করে মধু সংগ্রহ করছেন। আমরা যখন অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে যাব তখন চাক ছাড়া কিছু মিলবে না।

তিনি আরো বলেন, মধুর মৌসুমে একটা পরিপূর্ণ মধুর চাকে ২০/২৫ কেজি মধু পাওয়া যায়। ওই চাক থেকে ৬/৭বার ঐ পরিমাণ মধু সংগ্রহ করা যায়। কিন্ত যারা চোরা মধু আহরণকারী তারা অকালে আহরণ করার কারনে চাকে ৩শ থেকে ৫শ গ্রাম মধু পায়। যার বর্তমান বাজার মুল্যে ৫শ টাকা।

তবে অভাবের অভিযোগ এনে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক চোরাই মধু আহরণকারী বলেন, মধূ আহরণের পার্মিট নেই। আমরা খাবো কি? অবাবের তাড়নায় আমরা চুরি করে মধু আহরণ করি।

এ ব্যাপারে শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ফরেষ্ট স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান আহম্মেদ বলেন, এ ব্যাপারে আমরা প্রত্যেক স্টেশন ও টিমকে চিঠি দিয়েছি। এ ধরনের অপতৎপরতা ঠেকাতে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। তাছাড়া এই কাজে জড়িত কেউ ধরা পড়লে তার পারমিট বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এমএ হাসান বলেন, আমরা যাদেরকে সাসপেক্ট করছি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। ইতিমধ্যে অনেকের নামে মামলাও হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা সজাগ আছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *