নিজস্ব প্রতিনিধি: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে বাক স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে ও কারাগারে লেখক মুশতাকের মৃত্যুর ঘটনায় সাতক্ষীরায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে সাতক্ষীরার প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক কর্মীবৃন্দ।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে ওই কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক জোটের নেতা মুনসুর রহমান।
বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক কর্মী শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন, নাট্যকর্মী সিকান্দার আবু জাফর রায়হান, জেলা হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোপাল কুমার মন্ডল, বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ সাতক্ষীরার সমন্বয়ক শেখ আরফানুর রহমান প্রমুখ।
এ সময় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, যুব অধিকার পরিষদ সাতক্ষীরা সদরের সহ-সমন্বয়ক আল ইমরান, সদস্য শেখ সানমুন, মামুন, জামান, ওহাব, মিলন বিশ্বাস, জেলা হিন্দু ছাত্র পরিষদের আহবায়ক সরদারসহ সাংস্কৃতিক ও গণমাধ্যমকমীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, মুশতাক লুটপাটকারী কিংবা কালোবাজারী, সন্ত্রাসী ও ডাকাত ছিলেন না। বরং ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের মেধাবী ছাত্র মুশতাক আহমেদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিন্তার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন। ওই কারণেই তার জীবনপ্রদীপ নিভিয়ে দেয়া হলো। এটি কোন স্বাভাবিক মৃত্যু নয় বরং পরিকল্পিত হত্যাকান্ড।
তারা আরো বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপরে মানসিক নিষ্পেষণ চালানো হচ্ছে। আমরা এর নিন্দা জানানোর পাশাপাশি অবিলম্বে মুশতাক হত্যার বিচার এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল দেখতে চাই। মুশতাকের এই নির্ভিক আত্মদানের মধ্য দিয়েই দেশের তরুণ সমাজ জেগে উঠবে এবং দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও নাগরিক স্বাধীনতাসহ সুশাসন ও আইনের শাসন ফিরে আসবে।
সংবিধানের ধারা উল্লেখ করে তারা আরো বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ নম্বর অনুচ্ছেদ যেকোনো মানুষকে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের অধিকার দেয়। সেক্ষেত্রে কেউ লেখালেখি বা আঁকাআঁকির জন্য গ্রেফতার হতে পারেন না। কিন্তু ২০২০ সালের মে মাসে বাংলাদেশের পুলিশ জনপ্রিয় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর এবং লেখক মুশতাক আহমেদকে ঢাকার বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্দে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। ওই মামলায় মুশতাকের আইনজীবী ৬ বার জামিনের জন্য আবেদন করলেও তা না-মঞ্জুর করেন আদালত। যেখানে একজন ধর্ষককে, একজন জঙ্গিকে জামিন দেয়া হয়, সেখানে একজন লেখককে কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে নির্যাতন করে, বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়। এই দায় সরকারকে নিতে হবে। এই আইনের আওতায় যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের সবার মুক্তি দিতে হবে।