এসভি ডেস্ক: হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ সুপ্রিম কোর্টে লিভ টু আপিল করায় সাতক্ষীরায় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় নিম্ন আদালতে বিচার কার্যক্রম আবারও স্থগিত হওয়ার পথে। ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা চালায় বিএনপি ও জামায়াত জোটের নেতাকর্মীরা। দীর্ঘ ১৮ বছর পর বুধবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটির স্বাক্ষ্য গ্রহণের প্রস্তুতি নেয় রাষ্ট্রপক্ষ। তবে সুপ্রিম কোর্টে লিভ টু আপিল করায় নিম্ন আদালতে শুনানি স্থগিত হয়। এ কারণে মামলার বাদী মোসলেম উদ্দীনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি।
সাতক্ষীরা কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল লতিফ জানান, ২০০২ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষিতা মাহফুজাকে দেখতে যান। ঢাকায় ফেরার পথে কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে পৌঁছলে তার গাড়ি বহরে হামলা করে বিএনপি ও জামায়াত জোটের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন কলারোয়া থানায় একটি মামলা করতে চাইলে মামলাটি গ্রহণ করা হয়নি। পরে তিনি বাদী হয়ে উপজেলা যুবদলের সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ৭০ থেকে ৭৫ জনের নামে আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে এক যুগ পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালের ১৭ মে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ এবং ৩০ জনকে সাক্ষী করে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেখ সফিকুর ইসলাম। মামলাটির ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের পর ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে কোয়াশমেন্ট করেন আসামিপক্ষ। গত ৮ অক্টোবর হাইকোর্ট মামলাটির স্থগিত আদেশ প্রত্যাহার করে ৯০ দিনের মধ্যে বিচার কাজ শেষ করার জন্য সাতক্ষীরায় নিম্ন আদালতে পাঠান। আজ বুধবার এ মামলায় বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণের কথা থাকলেও তা হয়নি।
সাতক্ষীরা আদালতের অতিরিক্ত পিপি তামিম আহম্মেদ সোহাগ বলেন, ৯০ দিনের মধ্যে বিচার কাজ শেষ করার বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনার বিপক্ষে আসামিপক্ষ সুপ্রিম কোটের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করায় নিম্ন আদালতের শুনানি স্থগিত রয়েছে। আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে তারিখ নির্ধারণ করেছেন। আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নিম্ন আদালত এ মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন না। এ কারণে সব ধরনের প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বে মামলার বাদীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়নি।
আসামিপক্ষের আইনজীবী সাতক্ষীরা আদালতের অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ জানান, নিম্ন আদালতে ৯০ দিনের মধ্যে বিচারকাজ শেষ করতে হাইকোর্টের গত ৮ অক্টোবর দেওয়া আদেশের বিপক্ষে আসামিপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল দায়ের করে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) শুনানি হয়। বিচারক সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ২০২১ সালের ৪ জানুয়ারি ফের তারিখ নির্ধারণ করেন। আসামিপক্ষ সেই কাগজপত্র সাতক্ষীরার নিম্ন আদালতে আবেদনসহ দাখিল করায় বিচারক মামলার বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেননি।