দেবহাটা প্রতিনিধি: দেবহাটায় হযরত আলী গাজী ওরফে হযরত হাজী নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিগত ৭ বছর ধরে চালতেতলা মসজিদের প্রায় ৮ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাত, মসজিদের বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দ ও মুসল্লীদের সাথে অসদাচরণ এবং পাল্টা কমিটি গঠনসহ নানা অভিযোগ তুলেছেন মুসল্লীরা।
হযরত আলী গাজী পারুলিয়া ইউনিয়নের চালতেতলা গ্রামের মৃত কোনাই গাজীর ছেলে ও চালতেতলা পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি।
শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে মসজিদের বর্তমান কমিটির সভাপতি নুরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল মাষ্টার, মসজিদের ইমাম নুরুল ইসলাম, মুয়াজ্জিন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ, স্থানীয় আব্দুল করিম, মোসলেম গাজী, মহাতাব গাজী, গফফার গাজী, করিম মোল্যা, আবু হাসান গাজীসহ মসজিদের অর্ধশতাধিক মুসল্লিরা তাদের অভিযোগে বলেন, হযরত আলী গাজী দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর ধরে চালতেতলা পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন। সভাপতি থাকাকালীন সময়ে নিজের অনুসারীদের কাছে ইচ্ছেমতো মসজিদের জমি ইজারা দিয়েছেন। প্রতিবছর মসজিদের এসব ইজারাবাবদ লক্ষাধিক টাকা আয় হয়, যেগুলো বিগত সাত বছর ধরে তিনি কাউকে হিসাব না দিয়ে প্রায় আট লক্ষাধিক টাকা আত্মসাত করেছেন। বর্তমানে মসজিদটির বেহাল দশা। মসজিদের ছাদে একাধিক স্থানে বড়বড় ফাঁটল সৃষ্টি হওয়ায় একটু বৃষ্টি হলেই ছাদ ফুঁড়ে পানি পড়ছে মসজিদের ভিতরে। যেকারনে ছাদের উপরে প্লাস্টিকের পলিথিন দিয়ে বর্তমানে নামাজ আদায় করছেন মুসল্লীরা। দীর্ঘদিন ধরে এমন বেহাল অবস্থা থাকা স্বত্ত্বেও হযরত আলী মসজিদের উন্নয়নে মসজিদের আয়ের টাকা ব্যায় করেনি বলেও অভিযোগ মুসল্লীদের।
শুধু তাই নয়, মুসল্লিরা আরো জানান, বিগত প্রায় বিশ বছর ধরে ওই মসজিদটির উন্নয়নে সরকারী কোন অর্থ সহায়তা বরাদ্দ হয়েছে কিনা বা কতটাকা বরাদ্দ হয়েছে তাও কেবলমাত্র হযরত আলী ছাড়া জানেননা মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, কমিটির সদস্য কিংবা কোন মুসল্লী। এসব জানতে চাইলে কমিটির সদস্য ও মুসল্লীদের সাথে বারবার অসদাচারণ করেন হযরত আলী।
তারা আরো বলেন, হযরত আলী মসজিদ কমিটির নেতৃত্বে থাকাকালীন সময়ে মুসল্লিদের মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টি করেন বলেও অভিযোগ মুসল্লীদের। বিগত প্রায় ৫ মাস পূর্বে মুসল্লীদের প্রতিবাদের মুখে হযরত আলীর নেতৃত্বাধীন কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এতে করে বিগত তিনমাস মসজিদের ইমাম নুরুল ইসলামের বেতন বন্ধ করে দেন হযরত আলী। একপর্যায়ে নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ায় এবং মসজিদের কোন কমিটি না থাকায় গত ৯ সেপ্টেম্বর স্থানীয় নুরুজ্জামানকে সভাপতি এবং ইসমাইল মাস্টারকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেন মুসল্লীরা।
এরপর বৃহষ্পতিবার আবারো মসজিদে মুসল্লীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির জন্য হযরত আলী পাল্টা ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি মনগড়া কমিটি ঘোষনা দিয়ে জনসমর্থিত কমিটির নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকি এবং মন্তাজুর রহমান, ফজলু মোল্যাসহ তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলেও অভিযোগ মুসল্লীদের।
এঘটনার তদন্ত পূর্বক হযরত আলীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সর্বস্তরের মানুষ।
মসজিদের অর্থ আত্মসাতসহ এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হযরত আলী গাজী বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্তরা যেসব অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা। একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে এসব রটিয়ে বেড়াচ্ছে। প্রশাসন তদন্ত করলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।