Spread the love

শেখ বাদশা: আশাশুনি উপজেলার আশাশুনি সদর, প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নবাসী কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর একাধিক স্থানে বেড়িবাঁধ ও রিং বাধ ভেঙ্গে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ইউনিয়ন ৩টির বিস্তীর্ণ এলাকা লোনা পানিতে প্লাবিত হয়ে গেছে। ভেসে গেছে হাজার হাজার বিঘা জমির মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি। বিধ্বস্থ হচ্ছে ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে, সুপেয় পানি ও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।

গত ২০ মে আম্ফানের তান্ডবে ভেড়ী বাঁধ ভেঙ্গে ইউনিয়ন ৩টি ইউনিয়নের বহু গ্রাম প্লাবিত হয়। সেই থেকে এলাকার মানুষ পানিতে নাকানি চুপানি খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে আাসছে। বাঁধ সংস্কারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এগিয়ে আসলেও গত ঈদ উল আযহার পূর্বে তারা এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বারের নেতৃত্বে হাজার হাজার মানুষ বাঁধ রক্ষার্থে আপ্রাণ চেষ্টা করে আসছেন। অনেক এলাকা রিং বাঁধ দিয়ে রক্ষা করা হয়। ভেঙ্গে যাওয়া মূল বাঁধেও কাজ করা হয়েছে। এতে এই ৩ ইউনিয়নের কিছু অংশের মানুষ প্রাথমিক ভাবে রক্ষা পেয়েছিল। কিন্তু গত কয়েক দিনে নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩/৪ ফুট বৃদ্ধি পাওয়া এবং মুষল ধারা বৃষ্টিপাতের ফলে বৃহস্পতিবার ইউনিয়ন ৩টির ভেড়ী বাঁধধ ও রিং বাধ ভেঙ্গে আবার প্লাবিত হতে শুরু করে।

প্রতাপনগর ইউনিয়নের শ্রীপুর, কুড়িকাহনিয়া, হরিশখালি, চাকলা এবং শ্রীউলা ইউনিয়নের হাজরাখালী ও কোলা পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে হু হু করে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। জোয়ার-ভাটা বইতে থাকে লোকালয়ে। ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। দেখা দিয়েছে সুপেয় খাবার পানির অভাব। আশাশুনি ইউপি চেয়ারম্যান স ম সেলিম রেজা মিলন এলাকাবাসীকে নিয়ে অতিকষ্টে রিং বাধের ভাঙ্গন আটকাতে সক্ষম হওয়ায় ইউনিয়নের বাকী অংশ প্লাবনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। বাঁধ রক্ষা সম্ভব না হওয়ায় শুক্রবার শ্রীউলা ও প্রতাপনগর ইউনিয়নে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আজ রাতের মধ্যে শ্রীউলার পানি আশাশুনি সদর ইউনিয়নের কোন কোন গ্রামে স্পশর্শ করতে পারে বলে আশঙ্খা করা হচ্ছে। শ্রীউলা ও প্রতাপনগর ইউনিয়নে যাতয়াতের মেইন সড়ক (কার্পেটিং) প্লাবনের পানিতে ডুবে যাওয়ায় সড়ক দু’টি ধ্বংস হতে বসেছে। এলাকায় যাতয়াতের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এলাকার মানুষ আশ্রয় হীন, খাদ্যাভাব ও পানি সংকটে পড়েছে।
শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল জানান, তার গোটা ইউনিয়ন এখন পানিতে নিমজ্জিত। সাধারণ মানুষ বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়া বেড়িবাঁধ সংস্কার শেষ হতে না হতেই ফের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে সব ভেসে গেছে। মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। স্বচক্ষে না দেখলে এখানকার মানুষের দুরাবস্থা অনুভব করা যাবে না।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশ কুমার সরকার জানান, কয়েকটি স্থানে রিংবাধ দিয়ে পানিবন্ধ করা হয়েছে। তবে, প্রতাপনগর ইউনিয়নের চাকলা ও কুড়িকাহনিয়া এবং শ্রীউলা ইউনয়নের হাজরাখালী পয়েন্টে বেঁড়িবাধ ভেঙে এতটাই গভীর হয়েছে যে, সেখানে এখন বেঁড়িবাধ সংস্কার করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *