নিজস্ব প্রতিনিধি: করোনা নামক মহাদূর্যোগের মুখেও বাংলাদেশের মিডিয়াগুলি সব ধরনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। দায়িত্ব পালনকালে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন আবার প্রাণহানিও ঘটছে তা সত্ত্বেও প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য থেকে এতটুকু পেছায়নি। বৃহস্পতিবার সকালে সাতক্ষীরায় সাপ্তাহিক সূর্যের আলো পত্রিকার ৩য় বর্ষপূর্তি উৎসব ও ৪র্থ বর্ষে পদার্পন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্জ্ব মো: নজরুল ইসলাম।
তিনি আরও বলেন, দেশের মিডিয়াগুলির ন্যায় সাতক্ষীরায় সাপ্তাহিক সূর্যের আলো পত্রিকার এই সাহসিকতায় আমরা সতিই অনুপ্রাণিত।
দৈনিক পত্রদূতের উপদেষ্টা সম্পাদক অ্যাড. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক সূর্যের আলো পত্রিকার সম্পাদক ওয়ারেশ খান চৌধুরী পল্টু।
আরও বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আসাদুজ্জামান, দৈনিক কালের চিত্র পত্রিকার সম্পাদক আবু আহমেদ, শ্রমিক আন্দোলন সাতক্ষীরার আহবায়ক ফাহিমুল হক কিসলু, সাতক্ষীরা জেলা সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী, সাংবাদিক আব্দুস সামাদ প্রমূখ।
সাপ্তাহিক সূর্যের আলো পত্রিকার বার্তা সম্পাদক ডা: মো: মুনসুর রহমানের সঞ্চালনায় পবিত্র কোরআনের অংশ বিশেষ তেলোয়াত করেন কাজী সাঈদুজ্জামান এবং পবিত্র গীতার অংশ বিশেষ পাঠ করেন গোষ্ঠ বিহারী মন্ডল।
এ সময় সাপ্তাহিক সূর্যের আলো পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক ডা: আরিফ হোসেন, শ্রমিক আন্দোলন সাতক্ষীরার সদস্য সচিব ফারুকুজ্জামান, সাতক্ষীরা জেলা সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের সদস্য আসাদুজ্জামান সরদার মধু, সদর উপজেলা রং পালিশ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জুম্মান আলী সরদার, সহ-সভাপতি আবুল হোসেন, সদর উপজেলা ফার্নিচার ও রং শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি আসাদুল ইসলাম, সম্পাদক ইমরান হোসেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা টাইলস্ মোজাইক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম, সদর উপজেলা স্বর্ণ ছাইমাটি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হক, সম্পাদক ফারুক হোসেন, কলারোয়া ইলেকট্রিশিয়ান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক, সদর উপজেলা স্বর্ণ শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিলন রায়, সদর উপজেলা সংবাদপত্র হর্কার্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এমদাদুল ইসলাম, সম্পাদক হাফিজুল্লাহ, সদর উপজেলা ইলেকট্রিশিয়ান শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য সাদ্দাম হোসেন ও সোহরাব হোসেন, সাংবাদিক নুরুজ্জামান, মারুফ আহমেদ খান (শামীম), শেখ আলমগীর হোসেন, গোলাম রব্বানি, হাফিজুর রহমান, আজাহারুল ইসলাম, শেখ সেলিম হোসেন, ফটো সাংবাদিক আহাজ উদ্দিন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আসাদুজ্জামান বলেন, হাঁটি হাঁটি করে ৩ বছর পেরিয়ে ৪র্থ বর্ষে পত্রিকাটি প্রকাশনার ক্ষেত্রে যে ভূমিকা পালন করছে তা বিরল। আগামীতেও পত্রিকাটি নিজস্বতা মেনে বহুগণে পাঠক হৃদয়কে আকৃষ্ট করবে সেই প্রত্যাশা পাশাপাশি পত্রিকাটির উত্তরোত্তর মঙ্গল কামনা করেন তিনি। দৈনিক কালের চিত্র পত্রিকার সম্পাদক আবু আহমেদ বলেন, পত্রিকা প্রকাশনায় ব্যাপক টাকার প্রয়োজন। টাকার সংকটের জন্য অপসাংবাদিকতা করতে দেখা যায় উক্ত পত্রিকার প্রতিনিধিদের। সেদিক থেকে সাপ্তাহিক সূর্যের আলো ব্যতিক্রম। তাদের নিজস্ব আর্থিক ফান্ড রয়েছে; সেজন্য উক্ত পত্রিকার প্রতিনিধিদের অপসাংবাদিকতা করতে দেখা যায় না। যারা অপসাংবাদিকতা করে জেলার প্রকৃত সাংবাদিকদের সম্মানহানি করছে তাদের চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তর করার আহবান জানান তিনি।
শ্রমিক আন্দোলন সাতক্ষীরার আহবায়ক ফাহিমুল হক কিসলু বলেন, পত্রিকা প্রথমে যখন ঈষিকাতে দেখলাম তখন মনে হলো কে বুঝি আবার নতুনরুপে আমদানি হয়েছে। কিছুদিন পরে জানতে পারলাম পত্রিকাটির সম্পাদক আব্দুল ওয়ারেশ খান চৌধুরী। সে সময়ে পত্রিকাটি জনমনে তেমন গ্রহনযোগ্য হয়ে উঠেনি। তবে সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে পত্রিকায় ভিন্নরুপে সংবাদ প্রকাশ হতে থাকে। এরপরে সাপ্তাহিক সূর্যের আলো জনমানুষের হৃদয়ে একটি ভিন্নধারার ব্যতিক্রমী পত্রিকা হিসাবে জায়গা করে নিয়েছে। যার আলো এখন সাতক্ষীরার সর্বপ্রান্তে জ্বলজ্বল করছে।
তিনি আরও বলেন, এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় আমরা সাপ্তাহিক যায়যায়দিন এর গ্রাহক ছিলাম। এক সপ্তাহ পত্রিকাটি না পড়লে মন যেন কেমন করতো; তেমনি জেলার শীর্ষতম সাপ্তাহিক পত্রিকা সূর্যের আলো পাঠের জন্য অধীর আগ্রহে এক সপ্তাহে বসে থাকি। পত্রিকাটি এক সপ্তাহ পাঠ না করলে নিজের মনে মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করে। আশাকরি পত্রিকাটি আগামী দিনে দৈনিক পত্রিকায় রুপান্তরিত হবে সেই প্রতাশা করেন তিনি।
সাতক্ষীরা জেলা সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন বলেন, এক সময়ে বিখ্যাত পত্রিকা সাপ্তাহিক হলিডে, যায়যায়দিন ও ২০০০ ভিন্নধারার সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক পত্রিকাগুলোর মতো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল; তেমনি সাপ্তাহিক সূর্যের আলো ব্যতিক্রমী সংবাদ প্রকাশ করে জেলার দৈনিক পত্রিকাগুলোর মতো ভুমিকা রেখে চলেছে। এখন যেভাবে পত্রিকাটি চলছে; আগামী দিনগুলোতে আরও উন্নতরভাবে পত্রিকাটি চলবে সেই কামনা করেন তিনি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী বলেন, সাতক্ষীরায় আরও ৩ টি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। উক্ত পত্রিকাগুলোর অধিকাংশই অনিয়মিত প্রকাশিত হয়। তবে নিয়মিত প্রকাশনা ও সংবাদ প্রকাশে স্বচ্ছতার জন্য জেলার জনহৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন সাপ্তাহিক সূর্যের আলো। আমরা প্রত্যেক রবিবার পত্রিকা পাঠ করার জন্য অধীর আগ্রহে বসে থাকি। পত্রিকার সংবাদগুলো খুবই বিশ্লেষণধর্মী। সেজন্য একটু দেরিতে হলেও জেলার সাপ্তাহিক পত্রিকারগুলোর মধ্যে শীর্ষতম স্থানে পত্রিকাটি জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়েছেন।
সাংবাদিক আব্দুস সামাদ বলেন, কয়েকঘন্টার মধ্যেএকটি নিউজ সংগ্রহ করে আমরা দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ করি। উক্ত নিউজে মাঝে মাঝে বিশারদ তথ্য থাকেনা; তবে সাপ্তাহিক সূর্যের আলো পত্রিকা পাঠ করে সেই সংবাদের বিস্তারিত জানতে পারি। আমরা সময় সল্পতার জন্য একটি নিউজ ছোট করে করলেও এক সপ্তাহ পরে সূর্যের আলো পত্রিকার তা বড় আকারে দেখতে পাই। এমনকি শব্দ চয়ন ও বানানের দিক থেকে সূর্যের আলো সুন্দর, সাবলীল ও পরিমার্জিতভাবে সংবাদ ৩ বছর প্রকাশ করে ৪ বছরে পদার্পন করেছে; সেজন্য পত্রিকার সাথে জড়িত সকলকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি আগামী দিনগুলোতে তারা যেন এভাবে পত্রিকার প্রকাশনাটি ধরে রাখতে পারে।
সমাপনি বক্তব্যে অনুষ্ঠানের সভাপতি অ্যাড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, সূর্যের আলো যেভাবে কিরণ দেয় সেভাবে পত্রিকাটি দিতে পারছে না। উক্ত কারণগুলো চিহ্নিত করে আগামীতে তা দূরীভূত করতে পারলে সাপ্তাহিক সূর্যের আলো বহুগুণে কিরণ ছড়াতে পারবে। তাহলে জনহৃদয়ে সূর্যের আলো অনন্তকাল জাগ্রত থাকবে ; সেজন্য সূর্যের আলোর সকল প্রতিনিধিদের ভিন্নভাবে সংবাদগুলো তুলে ধরতে সহায়তার করার জন্য আহবান করেন তিনি।