কলারোয়া প্রতিনিধি: ডাক্তার দেখানোর নামে নিসন্তান বৃদ্ধার ৪০ লাখ টাকার জমি লিখে নেওয়ার ঘটনায় এক চাচাতো ভাইপোকে গ্রেফতার করেছে সাতক্ষীরার কলারোয়া থানা পুলিশ।
শনিবার ভোরে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার গয়ড়া গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতের নাম জাহাঙ্গীর বিশ্বাস(৪২)। তিনি কলারোয়া উপাজেলার বহড়া গ্রামের ইসমাইল বিশ্বাসের ছেলে।
জানা যায়, কলারোয়া উপজেলার কেরালকাতা ইউনিয়নের বহুড়া গ্রামের মৃত হাজের বিশ্বাসের মেয়ে সোনাভান বিবি(৬৫) স্বামী ওয়াজেদ আলীকে নিয়ে বাবার জমিতে বসবাস করতেন। সোনাভান বিবি নিঃসন্তান হওয়ায় চাচা মৃত ইসমাইল বিশ্বাসের ছেলে ইসরাফিল, আজিজুল ও জাহাঙ্গীরের কু-নজর পড়ে বৃদ্ধা সোনাভান বিবির বসবাসকৃত ৬ কাটা ভিটাবাড়িসহ দুই বিঘা জমির উপর।
৩ মাস পূর্বে সোনাভানের স্বামী ওয়াজেদ আলী চক্ষু অপরেশনের জন্য খুলনায় যান এবং কিছুদিন সেখানে অবস্থান করেন। ইতিমধ্যে বাড়িতে থাকতে থাকতে সোনাভান বিবিও অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন চাচাতো ভাইপোরা। তারা চিকিৎসা করানোর কথা বলে সোনাভান বিবিকে কলারোয়া হাসপাতালে নিয়ে আসার নাম করে কলারোয়া রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে আসেন এবং এক ধূর্ত দলিল লেখকের মাধ্যমে ৬ কাঠা ভিটাবাড়িসহ পুরো দুই বিঘা জমি নিজেদের নামে রেজিস্ট্রি করে নেন। এ ঘটনার ৪দিন পর সোনাভানকে বাড়িতে নিয়ে যান ওই প্রতারক চক্র।
আরো জানা যায়, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এক জনপ্রতিনিধির মদদে প্রতারক চক্ররা ইতিমধ্যে সোনাভান বিবি ও তার স্বামীকে ভিটাবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে পুরো জমি দখলে নিয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকায় ঘটনাটি বহু আলোচিত হলেও সমাধানের কোন পথ পাননি বৃদ্ধা সোনাভান বিবি ও তার স্বামী।
সোনাভান বিবি বলেন, ইসরাফিল, আজিজুল, জাহাঙ্গীরসহ তিন চারজন কয়েকটি কাগজে জোরপূর্বক আমাকে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন। রেজিষ্টারের কাছে যেয়ে দলিলে যা লেখা আছে তা পড়ে স্বাক্ষর করেছেন বলে বলার জন্য ধমক দেন। একপর্যায়ে স্থানীয় মাতব্বর, রাজনৈতিক নেতা ও আত্মীয়দের কাছে অভিযোগ করে প্রতিকার না পেয়ে কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার শরনাপন্ন হই।
কলারোয়া থানার উপপরিদর্শক ইস্রাফিল হোসেন বলেন, সোনাভান বিবি’র অভিযোগটি শুক্রবার এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার পর শনিবার ভোরে জাহাঙ্গীর হোসেনকে গয়ড়া গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ফুফুকে আটক রেখে জমি দানপত্র দলিল করে লিখে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন । তাকে শনিবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।