এসভি ডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় আম্ফান সর্বপ্রথম আঘাত হানবে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা উপকূলে। ইতিমধ্যে মঙ্গলবার দুপুর (১৯ মে) ১২টা থেকে উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলায় প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া শুরু হয়েছে।
করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আঘাত হানছে বাংলাদেশের উপকূলে। এ নিয়ে চরম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে উপকূলের বাসিন্দাদের।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূল থেকে ৭০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়টি প্রতি ঘণ্টায় ২২৫-২৪৫ কিলোমিটারের গতিবেগে ধেয়ে আসছে সাতক্ষীরা উপকূলের দিকে।
তিনি বলেন, আগামীকাল বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড়টি। তবে সর্বপ্রথম সাতক্ষীরা উপকূলে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আঘাত হানবে বলে ধারণা করছি আমরা। তখন গতিবেগ থাকবে প্রতি ঘণ্টায় ১৪০-১৬০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে উপকূলে ৫-১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে সাতক্ষীরা অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের সাতক্ষীরা উপকূলে প্রথমে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আ.ন.ম আবুজর গিফারী বলেন, উপকূলীয় এলাকা থেকে ইতোমধ্যে দুই হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকার ৬০ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবকরা একযোগে কাজ করছেন। মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে ও সচেতনতার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। প্রত্যেকটি আশ্রয়কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হবে। উপজেলাব্যাপী ১০৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
উপকূলীয় আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর আলিফ রেজা বলেন, বর্তমান পর্যন্ত দুই হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। উপজেলাব্যাপী ১০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সব মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্র নেয়া সম্ভব নয়। আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও আশপাশে যাদের ভালো বাড়ি রয়েছে তাদের বাড়িতে এসব মানুষদের আশ্রয় দেয়া হবে।
এদিকে, সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবিলায় ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। জেলায় ১৪৭টি সাইক্লোন শেল্টারসহ ১৭০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। জেলা ও উপজেলায় কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে।