Spread the love

মোমিনুর রহমান, দেবহাটা: সাতক্ষীরার দেবহাটায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন শেষে বাড়ী ফেরা চার শিশু ও একজন গ্রাম পুলিশসহ নারায়নগঞ্জ ফেরত ২৩ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। রবিবার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাইক্রো বায়োলজী ল্যাব (পিসিআর ল্যাব) থেকে তাদের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে করোনা ভাইরাস শনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।

করোনা ভাইরাসে আক্রান্তরা হলেন, বসন্তপুর গ্রামের মোহাম্মাদ গাজীর ছেলে নুর ইসলাম গাজী (৭০), একই গ্রামের হাকিম গাজীর ছেলে হাসান গাজী (৫০), সুশীলগাতী গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে শেখ আবুল কালাম (৪০), কোড়া গ্রামের ছাত্তার গাজীর ছেলে আবু সাঈদ (১৮), প্রথম করোনা আক্রান্ত দেবহাটার মান্দার গাজীর ছেলে রেজাউল ইসলাম (৪৫), সখিপুরের রবিউল গাজীর ছেলে জয়নাল আবেদিন (৫০), দেবহাটার মোকছেদ আলী গাজীর ছেলে মুসা গাজী (৩২), একই গ্রামের জামাত আলী গাজীর তিন ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩২), আকবর আলী গাজী (৪০), হাফিজুল ইসলাম গাজী (৩৮), বসন্তপুরের আকবর আলী গাজীর স্ত্রী বানুরা (৩০), দেবহাটার মুসা গাজীর স্ত্রী হালিমা বেগম (২৩), সাতক্ষীরা সদরের ধুলিহর গ্রামের সাইফুল্লাহর স্ত্রী হালিমা খাতুন (২৫), বসন্তপুরের হাসান আলী গাজীর স্ত্রী জবেদা খাতুন (৪৮), সাতক্ষীরা সদরের ধুলিহর গ্রামের নজরুল গাজীর ছেলে সাইফুল্লাহ (২৮), সখিপুরের জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী হালিমা খাতুন (৩০), দেবহাটার বসন্তপুর গ্রামের রেজাউল ইসলাম গাজীর শিশুপুত্র মামুন (১৪), দেবহাটা সদর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রামপুলিশ মৃত হাসান গাজীর ছেলে আব্দুর রহমান (৬০), দেবহাটার আকবর আলী গাজীর শিশুকন্যা খাদিজা খাতুন (৬), দেবহাটা সদরের মুসা গাজীর শিশুপুত্র মুজাহিদ (৪), বসন্তপুরের হাসান আলী গাজীর দুই ছেলে আল আমিন (১৯), আব্দুল মান্নান (১৮), সাতক্ষীরা সদরের ধুলিহর গ্রারে সাইফুল্লাহর শিশুকন্যা সাদিয়া সুলতানা (৭) ও দুই বছর বয়সী শিশুপুত্র হাসিব বাবু।

দেবহাটার প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নারায়নগঞ্জ ফেরত ইটভাটা শ্রমিক রেজাউলের সাথে সরকারি খানবাহাদুর আহছান উল্লাহ কলেজে কোয়ারেন্টাইনে থাকাবস্থায় করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে শিশু ও গ্রাম পুলিশ সহ ২৩ জনের শরীরে। এর আগে গত ১ মে নারায়নগঞ্জ থেকে আসার পর ইটভাটা শ্রমিকসহ ২৩ জন ও তাদের সংষ্পর্শে যাওয়া গ্রাম পুলিশ আব্দুর রহমানকে খানবাহাদুর আহছানউল্লা কলেজে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। সেখানেই চলছিলো করোনা আক্রান্ত রেজাউলের চিকিৎসা। চৌদ্দ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন শেষ হওয়ার আগে তাদের প্রত্যেকের নমুনা পরীক্ষার কথা ছিলো। সে মোতাবেক ১৪ মে কোয়ারেন্টাইন শেষ হওয়া মাত্রই তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নমুনা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাইক্রো বায়োলজী ল্যাবে পাঠানো হলেও রিপোর্ট আসার আগেই তড়িঘড়ি করে ওই দিনই (১৪ মে) কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যাক্তিদের বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এরপর থেকে গত তিন দিন ধরে তারা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়িয়েছে। করোনা শনাক্ত হওয়াদের অনেকেই আবার ঘুরে ঘুরে ঈদ কেনাকাটাও করেছেন বলে স্ব স্ব এলাকা থেকে জানা গেছে। কিন্তু রবিবার হঠাৎ করেই তাদের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় দেবহাটা জুড়ে জনমনে তীব্র আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া আফরীন জানান, প্রশাসনের নজর এড়িয়ে করোনা আক্রান্তদের ঘুরে বেড়ানো অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে এবিষয়ে আগে কেউ উপজেলা প্রশাসন কিংবা পুলিশকে জানায়নি। করোনা আক্রান্তদের প্রত্যেকের বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা পেলে করোনা ছড়িয়ে পড়া ইউনিয়নও লকডাউন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *