Spread the love

কামরুল হাসান: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন সাতক্ষীরা জেলার কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি)।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে ২৩১টি কমিউনিটি ক্লিনিকে গ্রামীণ জনশক্তির মাঝে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ২৩৪জন সিএইচসিপি।

প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রতিদিন গড়ে ৪০-৫০ রোগীকে সেবা দেওয়া হয়। একই সাথে বিভিন্ন ধরণের প্রায় ৩০ প্রকার ঔষধ দেওয়া হয়। করোনার এই দুর্যোগ মুহুর্তে সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও কমিউনিটি ক্লিনিকে সিএইচসিপিরা জীবন বাজী রেখে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এর সাথে যোগ হয়েছে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের অনেকের বিরূপ আচরণ আর শারীরিক সমস্যা বা রোগের কথা না বলে সরাসরি নাম ধরে ঔষধ চেয়ে নেয়ার বিষয়টিও।

কলারোয়া উপজেলা সিএইচসিপি এসোসিয়েশনের সভাপতি ও কাদপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি আব্দুল কালাম বলেন, সিসি’তে (ক্লিনিক) গড়ে প্রায় ৪০-৫০ জন সেবাগ্রহীতা আসেন। এদের অনেকে জ্বর, সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা নিয়ে আসছেন, এসব রোগীদের সেবা দিচ্ছি। এছাড়া ক্লিনিকে যেদিন ইপিআই কার্যক্রম হয় সেদিন মানুষের উপস্থিতি থাকে অনেক বেশি। আগত সেবাগ্রহীতাদের আমরা নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ঔষধ ও সেবা প্রদানের চেষ্টা করছি। তাদের করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতামূলক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে মোটেই আমরা নিজেরাই সুরক্ষিত থাকতে পারছি না। কারণ আগত রোগীদের অনেকেই এগুলো মানছেন না। বারান্দার গেটের বাইরে তাদের অবস্থান করতে বলা হলেও অনেকেই শুনছেন না, বিরূপ আচরণ করেছেন। ফলে করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে শঙ্কিত আমরা। এছাড়া অনেক রোগী অবান্তর মন্তব্য করেন। রোগের কথা না বলে নাম ধরে ঔষধ চান। অপ্রয়োজনীয় বা সংকটের কারণে ঔষধ না দিতে পারলে কেউ
কেউ খারাপ ব্যবহারও করেন।

তিঁনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদেরকে মাত্র একটি অনটাইম মাস্ক ও টিস্যুকাপড়ের গাউন দেয়া হয়েছে। ভাইরাস প্রতিরোধে এগুলো কতটূকু টেকসই সেটা দেখলে ও হাতে নিলেই বুঝতে পারবেন।

একই কথা জানালেন সাতক্ষীরা জেলা সিএইচসিপি এসোসিয়েশনের সভাপতি ও তালার জুসখোলা কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মো.আল আমীন।

তিঁনি বলেন, ঝুঁকি নিয়েই বর্তমানে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত রোগী দেখতে হচ্ছে। মৌসুম পরিবর্তনের কারণে আগত রোগীদের বেশিরভাগই
জ্বরে আক্রান্ত। এখন এদের মধ্যে কেউ যদি করোনা আক্রান্ত হয়ে থাকে তবুও তার রোগ চিহ্নিত কিংবা চিকিৎসা না দেবার কোন সুযোগ সিএইচসিপিদের নেই। এছাড়া চিকিৎসা দিতে গিয়ে নিজে এবং আরো অনেকে করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা তো আছেই।

প্রান্তিক মাঠ পর্যায়ে কর্মরত জেলার সিএইচসিপি’রা নিজেদের জীবনের সুরক্ষা আর নিরাপত্তার বিষয়ে সুদৃষ্টি দেয়ার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *