হাসিবুল হাসান সোহার্তো: শিক্ষা শান্তি আর প্রগতির পতাকাবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সগৌরবে এগিয়ে চলেছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন হিসেবে নাম লিখিয়েছে।
বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবসময় বলতেন ” ছাত্রলীগের ইতিহাস বাংলাদেশের ইতিহাস।” বাংলা,বাঙালি, স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের লক্ষ্যে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ফজলুল হক হলের অ্যাসেম্বলি হলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রতিষ্ঠার সময় নাম ছিলো পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ। পরবর্তী সময়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ নামের পরিবর্তি হয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। শিক্ষার সাথে দীক্ষা, জীবনের সাথে দেশপ্রেম লাখ লাখ কর্মীর আবেগ, অনুভূতি ও ভালোবাসার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দীর্ঘ পথ চলার ৭২ বছর অতিক্রম করেছে, প্রতিষ্ঠার পরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সসর্বপ্রথম মাতৃভাষা বাংলার জন্য সংগ্রাম করেছিল।বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আছে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের গৌরবউজ্জল ইতিহাস। মাতৃভাষার জন্য প্রাণ দিতে হয়েছে অনেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের যার ফলপ্রসূতিতে আমারা মাতৃভাষা বাংলাকে পেয়েছি।
এছাড়া ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্যানগার্ড হিসেবে সর্বদা নিয়োজিত ছিলো বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ১৯৬২ সালে শুরু হয় তুমুল শিক্ষা আন্দোলন যেখানে ছাত্রলীগ তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে দূর্বার ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলে।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৬৬ সালে ৬ দফা দাবি পেশ করেন, যা ছিলো বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ, যার মাধ্যমে স্বাধীনতা আন্দোলনের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়, যেখানে ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে, এছাড়া ১৯৬৯ সালে শুরু হয় ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান তখন তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ বাংলার ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু ‘ উপাধি দেন।এছাড়া ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর ভ্যানগার্ড হিসেবে ছাত্রলীগ নিয়োজিত ছিলো।গৌরব,ঐতিহ্য, ও সাফল্যের দীর্ঘ পথ চলায় ছাত্রলীগ হারিয়েছে সহস্রাধিক নেতা কর্মীকে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে আমাদের প্রাণের সংগঠনের ১৭ হাজার বীর বুকের তাজা রক্ত এঁকেছেন ৫৬হাজার বর্গমাইলের সার্বভৌম মানচিত্র। সেসব বীর যোদ্ধারা আমাদের অনুপ্রেরণা, আমাদের শক্তি সাহস, বাংলাদেশের সাথে ছাত্রলীগের ইতিহাস কখনো মুছে ফেলা যাবে না, আর বাংলাদেশের সাথে ছাত্রলীগের ইতিহাস লিখে শেষ করা যাবে না।
সবশেষে বলবো
এসো নবীন দলে দলে
ছাত্রলীগের পতাকাতলে
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
জয় হোক বাংলাদেশ ছাত্রলীগের
লেখক: ছাত্রনেতা, সরকারি তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, ঢাকা ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ১৩ নং লাবসা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ