দেবহাটা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা সদরের হাড়দ্দাহ গ্রামের চিহ্নিত শীর্ষ চোরাকারবারী হাফিজুর রহমান মন্টুর ট্রলার ভর্তি অবৈধ মালামালসহ ১৩ জনকে আটক করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। যার মধ্যে আছেন হাড়দ্দাহ এলাকার ১১ জন।
বৃহষ্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড দক্ষিণ জোনের অপারেশন অফিসার লেফটেন্যান্ট ওয়াশিম আকিল জাকি’র নেতৃত্বে কোস্ট গার্ড সদস্যরা কুয়াকাটার অদুরে ২নং বয়ারচর এলাকায় সাগর থেকে চোরাচালানের সময় ভারতীয় থ্রি পিছ ও অন্যান্য অবৈধ মালামাল ভর্তি ট্রলারসহ তাদেরকে আটক করা হয়েছে বলে কোস্ট গার্ডের ভোলা সিজি’র গোয়েন্দা শাখার দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হাড়দ্দাহ গ্রামের আটককৃতরা হলেন, মৃত আবুল হোসেনের ছেলে ও চোরাকারবারী মন্টুর আপন সহোদর রবিউল ইসলাম রবি (৩৬), ভাইপো সবুর হোসেন (১৭), হানিফ সরদারের ছেলে আসাদুল (৩৮), গোলাম হোসেনের ছেলে রনি (২৫), দেছার উদ্দীনের ছেলে দেলোয়ার হোসেন (৩২), আব্দুল মাজেদের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৩), হামিদ উদ্দীনের ছেলে খালিমুল ইসলাম (৪০), মুনসুরের ছেলে নজরুল ইসলাম (৪২) ও নুর মোহাম্মাদের ছেলে জাকির হোসেন (৪০)।
আটককৃতদের পরিবার ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, হাড়দ্দাহ গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে চিহ্নিত চোরাকারবারী হাফিজুর রহমান মন্টু দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ভারত থেকে মুল্যবান শাড়ী, থ্রি-পিছ সহ অন্যান্য অবৈধ মালামালের চোরাচালান করে আসছে। আর এ কাজের জন্য তিনি ব্যবহার করছেন হাড়দ্দাহ এলাকার নীরিহ মানুষদের।
আরো জানা গেছে, বিগত কয়েক বছরে রীতিমতো আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়া মন্টু জেলা ও জেলার বাইরের চোরাকারবারীদের কাছে ‘জঙ্গলের ব্যবসায়ী’ হিসেবে সুপরিচিত। সুনির্দিষ্ট কোন স্বচ্ছ ব্যবসা না থাকলেও বর্তমানে ব্যাপক অর্থ সম্পদের মালিক মন্টু। হাড়দ্দাহ গ্রামে রয়েছে তার বিলাসবহুল একটি বাড়ী। এছাড়া কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় আরো একটি বাড়ী নির্মাণের কাজ চলছে । বিভিন্ন ব্যাংকে নামে বেনামে আছে অঢেল টাকা। জেলার অভ্যন্তরে চোরাকারবারী মন্টুর ৫ থেকে ৭ কোটি টাকার অর্থসম্পদ রয়েছে। ভারতের খিদিরপুরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিনিয়ত ভারতীয় বিভিন্ন ব্রান্ডের মুল্যবান শাড়ি, থ্রিপিছ সহ অন্যান্য অবৈধ মালামাল ট্রলারভর্তি করে নদী ও সাগর পথে সেগুলোর কোটি কোটি টাকার চালান বাংলাদেশে নিয়ে আসে চোরাকারবারী মন্টু।
বৃহষ্পতিবার চোরাকারবারী মন্টুর ট্রলারভর্তি এমনই একটি অবৈধ মালের বড় চালানসহ হাড়দ্দাহ গ্রামের ১১ জনকে আটক হবার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন তিনি।
এদিকে চোরাচালানের অবৈধ ব্যবসার বিষয়ে জানতে চাইলে চোরাকারবারী মন্টু এলাকাবাসী ও আটককৃত ১১ জনের স্বজনদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। আর আমি কোন চোরাকারবারের সাথে জড়িত না।