Spread the love

নাজমুল শাহাদাৎ(জাকির): অপহরণের প্রায় দেড়মাস অতিবাহিত হলেও এখনও উদ্ধার হয়নি সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার বহেরা এটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী রাবেয়া খাতুন(১৭)। ফলে সীমাহীন হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন ওই ছাত্রীর পরিবার ও স্বজনরা। এদিকে মামলার আসামীদের হুমকিতে চরম আতঙ্কে দিন কাটাতে হচ্ছে ওই স্কুল ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদেরকে।

ওই স্কুলছাত্রীর বাবা দেবহাটা উপজেলার শশাডাঙ্গা গ্রামের ফয়জুল্লাহ মোল্যা বলেন, পার্শ্ববতী গোবরাখালি এলাকার আসাদুর রহমানের ছেলে ধর্ষণ, ছিনতাই, অপহরণসহ একাধিক অপকর্মের হোতা আবু সুফিয়ান প্রায়ই আমার মেয়েকে উত্যক্ত করতো। এক পর্যায়ে আমার মেয়েকে উত্যক্ত না করার জন্য আবু সুফিয়ানের পরিবারকে জানায় কিন্তু আবু সুফিয়ান আমার কথায় কোনরূপ কর্ণপাত করেনি।

বরং তার দুলাভাই সাতক্ষীরা সদরের ছয়ঘরিয়া এলাকার হামিদ ঢালীর ছেলে সাইফুল ইসলামের ছত্রছায়ায় আবু সুফিয়ান আরো হিংস্র হয়ে ওঠে। কোন উপায়ন্তর না পেয়ে আমি আমার মেয়েকে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। গত ১৯ শে ডিসেম্বর আমার স্ত্রী ও মেয়ে সাতক্ষীরা সদরের দত্তবাগ এলাকায় আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যায়।

৩ দিন পর গত ২২শে ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া এলাকার হামিদ ঢালীর ছেলে সাইফুল ইসলাম, সাইফুল ইসলামের স্ত্রী শিল্পী, দেবহাটা উপজেলার গোবরাখালি গ্রামের মৃত কফিল উদ্দিনের ছেলে আসাফুর রহমান ও একই এলাকার হায়দার আলীর ছেলে আবু জাহিদ দত্তবাগ এলাকা থেকে আমার মেয়েকে অপহরণ করে ।

কাঁদতে কাঁদতে ফয়জুল্লাহ মোল্যা আরো বলেন, বিভিন্ন জায়গায় অনেক খোজাঁখুজির পরেও মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে ওই ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ১লা জানুয়ারী সাতক্ষীরা থানায় একটি মামলা করি। ওই মামলায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমার মেয়েকে এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। আমি জানতে চাই আমার মেয়ে এখনও বেচেঁ আছে নাকি মারা গেছে?

তিনি বলেন, আবু সুফিয়ান একটি ধর্ষণের মামলায় জেলে ছিলো। জেল হতে সপ্তাহখানেক আগে জামিনে বেরিয়েছে আবু সুফিয়ান। তাছাড়া আমার ওই মামলার আসামীরা উচ্চ আদালত হতে জামিনে আছে। আবু সুফিয়ানসহ মামলার আসামীরা প্রতিনিয়ত মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছে। আমি যদি মামলা তুলে না নেই তাহলে তারা আমার মেয়েকে মেরে ফেলবে বলে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাতক্ষীরা সদর সার্কেল) মীর্জা সালাউদ্দীন বলেন, ওই মামলার ২ আসামী জামিনে থাকায় তাদেরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারছিনা। ওই আসামীদের জামিন জামিন বাতিল হলে আমরা তাদেরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারলে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। এছাড়া আমরা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারের জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি। এদিকে মামলার বাদীর পরিবারকে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হুমকি দিলে থানায় সাধারণ ডায়েরী করলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *