এসভি ডেস্ক: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় গরু চুরির অভিযোগে রাফিকুল ইসলাম (১৪) নামে এক শিশুকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার সকালে উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের দক্ষিণ ধুমাইটারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রাফিকুল ওই গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
এ ঘটনায় পুলিশ গত রোববার দিবাগত রাতে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। আহত শিশু বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত শুক্রবার দিবাগত রাতে একই গ্রামের নজু মিয়ার গরু চুরির অভিযোগে স্থানীয় রিয়াজুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম, ফজলু মিয়া, ফজল মিয়া শিশু রাফিকুলকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় এবং রাতে ফজলের বাড়িতে রেখে দেয়। পরদিন শনিবার সকালে স্থানীয় তনু প্রামাণিকের বাড়ির উঠানে বৈঠক বসে। সেখানে সালিশি সিদ্ধান্ত মোতাবেক চুরির অপরাধে রাফিকুলকে বেঁধে পায়ের তালায় পেটানো হয়। পরে অসুস্থ রাফিকুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে স্বজনরা।
রাফিকুলের পরিবারের দাবি, পূর্ব শত্রুতার জেরে রাতে তাকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে এক দফা মারধর করে বন্দি করে রাখা হয়। পরদিন সালিশি বৈঠকে তাকে ফের পেটানো হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সালিশ বৈঠকে শিশু রাফিকুলকে নির্যাতনের ছবি ভাইরাল হলে বিষয়টি প্রশাসনসহ সবার নজরে আসে।
এ নিয়ে রোববার দিবাগত রাতে রাফিকুলের বড় ভাই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৩ জন নামীয় এবং ১০ হতে ১২ জন অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেন।
রাতেই পুলিশ একই গ্রামের মামলার আসামি বাবলু মিয়ার ছেলে রানা মিয়া এবং আব্বাস আলীর ছেলে আইজল হককে গ্রেফতার করে। অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
মামলার বাদী রফিকুল অভিযোগ করেন, স্থানীয় প্রভাবশালী তনু প্রামাণিক তার ছোট ভাইকে বেধড়ক পিটায়। এছাড়াও লেলিন প্রামাণিক, মুসা প্রামাণিক, সাবু প্রামাণিক, তুহিন প্রামাণিক গাছের ডাল দিয়ে তাকে পিটিয়ে আহত করে।
ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কবির মুকুল অভিযোগ করেন, রাফিকুল একজন পেশাদার চোর। ইতোপূর্বে সে বেশ কয়েকটি চুরি করেছে। সে কারণে স্থানীয় সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে শাস্তি দেওয়া হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তফা মিয়া জানান, মামলার এজাহারে যদিও চুরির ঘটনা উল্লেখ নেই, তবে গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. বিশ্বেশ্বর চন্দ্র সরকার জানান, শিশু রাফিকুল শঙ্কামুক্ত। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে সময় লাগবে।