Spread the love

শেখ বাদশা, আশাশুনি: আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অপূর্ণতা ও দুরাবস্থার কারনে ভেঙ্গে পড়েছে স্বাস্থ্য সেবার মান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটিতে ২১জন এমবিবিএস চিকিৎসকের পদ থাকলেও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ অন্য ২জন এমবিবিএস চিকিৎসক দিয়ে দায়সারা ভাবে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম।

চিকিৎসক সংকটের কারণে চিকিৎসক ও চিকিৎসার সরঞ্জামাদির সংকট থাকার কারণে এলাকার সাধারণ মানুষ অসুখ বিসুখে সরকারী এ হাসপাতাল মুখো হতে চায়না। বাধ্য হয়েই পাশ্ববর্তী প্রাইভেট ক্লিনিক ও জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যেতে হয় তাদের। এ সরকারী হাসপাতালটি দৃষ্টি নন্দন ও বহুতল ভবন হলেও এখানে নেই হাসপাতালের চাহিদামতো প্রাণ ভোমরা এমবিবিএস চিকিৎসক। আর এ কারণেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে বৈধ-অবৈধ প্রাইভেট ক্লিনিক। 

এছাড়া এ হাসপাতালে একজন আয়ুর্বেদ, হোমিওপ্যাথিক ও একজন ডেন্টাল সার্জনের পদ থাকলেও সে পদে নেই কোন চিকিৎসক। এজন্য ২জন চিকিৎসকের মধ্যে একেক জনকে বাধ্য হয়ে একটানা ২দিন করে ডিউটি করতে হয় বলে জানাগেছে। 
নাম না প্রকাশে সর্তে একজন এমবিবিএস চিকিৎসক জানান, অধিক সময় ধরে ডিউটি করায় রোগীদের সঠিক চিকিৎসা দিতে পারেন না চিকিৎসকরা। আর এ কারণেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে বৈধ-অবৈধ প্রাইভেট ক্লিনিক।হাসপাতালের আইপিএস মেশিনটি বিকল হয়ে পড়ে থাকায় রাতে লোডশেডিং হলে হাসপাতাল কক্ষে হারিকেন জ্বালিয়ে আলোর ব্যবস্থা করা হয়। জেনারেটর থাকলেও ব্যবহার করা হয়না। ।

হাসপাতালের প্রশাসনিক দপ্তর সূত্রে জানাগেছে, এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট, প্যাথলজি আছে কিন্তু নেই ক্যামিকেল ও প্যাথলজিষ্ট। দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে আল্ট্রসনাগ্রাম মেশিন। নেই এ্যানাস্থেসিয়া চিকিৎসক, নেই গায়নি চিকিৎসক। নেই প্রয়োজনীয় বেডসীড ও বালিশ কভার। দীর্ঘ দিন ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে হাসপাতালের জরুরী এ্যাম্বুলেন্স। এক কথায় আশাশুনি সরকারী হাসপাতালটির যেন নেই নেই অবস্থা।

অভিযোগ উঠেছে, প্রাইভেট ক্লিনিকের এ্যাম্বুলেন্সটি ভাড়া খাটানোর জন্য সরকারী এ্যাম্বুলেন্সটি ঠিক করছেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে ঔষুধ স্বল্পতা, চিকিৎসকের অভাবে রোগীরা ঠিকমত চিকিৎসা সেবা না পাওয়াসহ রয়েছে অসংখ্য অভিযোগ। বর্তমান সরকার যেখানে স্বাস্থ্য খাতকে উন্নত করতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, সেখানে আশাশুনি সরকারী হাসপাতালে এই বেহাল দশার কারণে সরকারের ভাবমুর্তি মারাত্বক ভাবে প্রশ্ন বিদ্ধ হচ্ছে বলে দাবী এলাকাবাসীর।

আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ অরুণ কুমার ব্যানার্জী বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি সিভিল সার্জনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়কে অবহিত করা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারী এ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার যোগ্য হবে।

এমতাবস্থায় সরকারী হাসপাতালের ঔষুধ স্বল্পতা নিরোসনসহ সাধারণ মানুষের সকল প্রকার উন্নত স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সাংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাধারণ মানুষ ও স্থানীয় সচেতন মহল। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *