Spread the love

মাসুদ পারভেজ, কালিগঞ্জ প্রতিনিধি: পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে কালিগঞ্জে ব্যস্ত সময় পার করছেন দর্জিপাড়ার কারিগররা। ঈদ যতো এগিয়ে আসছে ততো চোখের ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে দর্জিদের।

যারা নিজেদের পছন্দমতো কিংবা একটু ভিন্ন ডিজাইনের ফিটিং পোশাক পরতে পছন্দ করেন তারাই ভিড় করছেন উপজেলার নামী-দামি থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার বিভিন্ন দর্জির দোকানে। গ্রাহকদের মনের মতো করে পোশাক তৈরি করতে রাত-দিন ব্যস্ত সময় পার করছেন দর্জিবাড়ির কারিগররাও।

কাপড় কাটা, সেলাই করা আর ট্রায়াল দেয়ার কাজ নিয়েই এখন জমে আছে দর্জিপাড়া। যেখানে থাকে নিজের করা ডিজাইনের প্রাধান্য। থাকে নিজস্ব ভিন্নতাও। ফ্যাশন হাউজ থেকে না কিনে পোশাকটা নিজের মত করে বানাতে চান বলেই কিছুটা আগে ভাগে দর্জিবাড়িতে ঠু মারা। এক্ষেত্রে খরচটাও তুলনামূলক কম পড়ে।

সরজমিনে ঘুরে ঘুরে দেখা যায়,  উপজেলার সর্ববৃহৎ আজিম গঞ্জ বাজার,  মৌতলা বাজার, বিষ্ণুপুর বাজার, দক্ষিণ শ্রীপুর বাজার, কৃষ্ণনগর বাজার,  জিরানগাছা বাজার, রতনপুর বাজার, পিরোজপুরসহ বিভিন্ন অলিগলিতে টেইলার্সের কারিগররা নর-নারীদের পোশাক তৈরিতে চরম ব্যস্ত সময় পার করছে। আর কয়েকদিন পর ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতর। তাই ঈদকে সামনে রেখে গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে পছন্দের কাপড় তৈরিতে মহাব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন  কালিগঞ্জ উপজেলার প্রায় কয়েক’শ দর্জি।

এসব দোকান ঘুরে দেখা যায়, এখন তাদের কথা বলার সময় পর্যন্ত নেই। দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে তারা। শার্ট, প্যান্ট, সেলোয়ার কামিজ, ফতুয়া, ব্লাউজ, থ্রি-পিছ, পাঞ্জাবি, কামিজসহ বিভিন্ন ধরণের থান কাপড় থেকে পোশাক সেলাই করছেন তারা। উপজেলার বড় বড় শপিং মলগুলোতে তৈরী পোষাকের যেমন কদর বেশী, তেমনি বাজার ভিত্তিক স্টেশনগুলোর দর্জিবাড়িতে চলছে পোষাক তৈরীর ধুম।

উপজেলার অলিগলি থেকে শুরু করে সমস্ত টেইলার্সেই ঊর্ধ্বশ্বাসে কাজ করছেন টেইলার্স কর্মীরা। কিছু কিছু নামিদামী টেইলার্সে নতুন অর্ডার নেয়া বন্ধ করলেও কাজের চাপ তাতে কমেনি। এখন পর্যন্ত যা অর্ডার নেয়া হয়েছে তাই সময়মতো শেষ করতে হিমশিম খাবেন বলে জানাচ্ছেন তারা। যাদের রুচি মূলত বুটিক নির্ভর নয়, তাদের বেশির ভাগই পা পড়েছে দর্জি বাড়ির দরজায়। সেলাইয়ের অস্বাভাবিক মুল্যবৃদ্ধির পরও ফ্যাশনে নিজস্ব রুচির ছাপ দিতে ভিড় বাড়ছে, দর্জির দোকান গুলোতে।

দর্জি দোকানে আসা শাহজাদা,  রুকাইয়া জামান তন্নি,  তিশা নামের  কয়েকজন গ্রাহক জানান, ঈদের সময় সবাই চায় নতুন পোশাক পরতে। রেডিমেড দোকানে একই নকশার অনেক পোশাক থাকে। তাই নিজেদের পছন্দ মতো বানাতে কাপড় কিনে দর্জী দোকানে এসেছি। মৌতলা ইউনিয়ন এর পরমানন্দকাটি গ্রামের সালমা পারভীন নামের এক নারী জানান, ঈদকে সামনে রেখে থ্রি পিস সেলাই করতে দর্জির দোকানে তিনি এসেছেন। কারণ একটাই, দর্জির দোকান থেকে কাপড় সেলাই করলে সেই জামা পরতে ফিটিং হয়। সব দিক থেকেই ভালো হয়, তাই আসা।

ঈদকে সামনে রেখে জামার কাপড় কিনতে আসা আসাদুজ্জামান আকুল নামের এক কর্মজীবি জানান, প্রতি বছর ঈদে আমি কাপড় কিনে জামা বানাই। কিন্তুু এ বছর যেন জামার কাপড়ে দামও বেশি। আবার দর্জিরাও গত বছর থেকে মজুরি ১০০ টাকা বেশি চাচ্ছে । যদি দাম টা একটু কম থাকে তাহলে মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য ভালো হত।

মূল্য একটু বেশী হলেও নিজের মত করে কাপড় কিনে বানানো যায় বলে জানান টেইলার্সে আসা একাধিক নারী।তবে দর্জিরা বলছে ঈদকে সামনে রেখে গত বছর থেকে এ বছর প্রচুর অর্ডার আসছে। অর্ডার প্রতি তারা ১৫০-২৫০ টাকা করে মুজুরি নিচ্ছে। এই অর্ডার সময় মতো দিতে অতিরিক্ত কারিগর নিয়োগ করেও বিরতিহীন ভাবে রাতভর পর্যন্ত কাজ করে ক্রেতাদের চাহিদা মোতাবেক পোশাক তৈরির কাজ চালানো হচ্ছে। তবে ১৫ রোজার পরে আমরা আর অর্ডার নিবেননা বলে জানান বেশির ভাগ দর্জিরা। ছেলেদের তুলনাই মেয়েদের বেশী লক্ষ্য করা যাচ্ছে দর্জিপাড়াগুলোতে।