শেখ বাদশা, আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনিতে ঘূর্ণি ঝড় ‘ফণি’র আঘাতে ৩০ হাজার ৯৫০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত, সহস্রাধিক ঘরবাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণ বিধ্বস্থ ও ১০ হেক্টর জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে।
আশ্রয় শিবির থেকে আশ্রয় নেওয়া মানুষকে শনিবার বিকালে বাড়িতে ফেরৎ পাঠানো শুরু হয়েছে।
উপজেলার ১১ ইউনিয়নের উপর দিয়ে শুক্রবার রাতে ঘুর্ণিঝড় ফণি প্রচন্ড বেগে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাতের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়ে যায়। পূর্ব থেকে উপজেলা প্রশাসন, সিপিপিসহ সকল জন প্রতিনিধিদের সতর্কতামূলক ব্যবস্থায় মানুষ নিরাপদে অবস্থান নেওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হয়।
উপজেলার ২৬টি সাইক্লোন শেল্টার ও ৮১টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৩০ হাজার ৯৫০ জন মানুষ আশ্রয় গ্রহণ করেন। প্রাথমিক তথ্য মতে এ পর্যন্ত সহস্রাধিক ঘরবাড়ি, দোকান পাট, নৈকাটি দাখল মাদ্রাসাসহ কয়েকটি মাদ্রাসা ভবন আংশিক বা পুরোপুরি বিধ্বস্থ হয়েছে।
৪ সহস্রাধিক গাছ-গাছালি উপড়ে গেছে। ১০ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সহস্রাধিক হাঁস-মুরগি মারা গেছে। সকল আশ্রয় শিবিরে ২০ মেঃ টন চাউল এবং ২ লক্ষ টাকার শুকনা খাবার পরিবেশন করে শুক্রবার ও শনিবার দুপুর পর্যন্ত খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ১২ টি মেডিকেল টিমের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা, পানি শোধন ট্যাবলেট প্রদান করা হয়।
প্রত্যেক ইউনিয়নে ৩ জন করে সরকারি কর্মকর্তাকে ট্যাগ করে, স্ব স্ব ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে দুর্যোগ মুকাবেলা ও সহযোগিতা দানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়। এডিসি (রাজস্ব), উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) ও পিআইও সার্বক্ষণিক ভাবে দায়িত্ব পালন করেন।
শুক্রবার দুপুরে ও রাত্রে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাহুনিয়া ওয়াপদার বাঁধ ওভার ফ্লো/চুইয়ে পানি ভিতরে ঢুকতে শুরু করে। পাউবোর দেওয়া বস্তায় বালি ভর্তি করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন জন প্রতিনিধি ও ২ শতাধিক মানুষ নিয়ে বাঁধ রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়েন। ফলে বাঁধ ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পেলেও এখনো সুরক্ষিত নয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলিফ রেজা ও পিআইও সোহাগ খান জানান, বর্তমানে ঘুর্ণি ঝড়ের অবস্থা আশংকামুক্ত। সংকেত ৪ নং এ নেমে এসেছে। কোন শংকা না থাকায় আশ্রয় কেন্দ্র থেকে সকলকে বাড়ি ফিরতে বলা হয়েছে।