Spread the love

আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনি উপজেলা শিক্ষা অফিসের উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোসাঃ শামসুন্নাহার ও অফিস সহকারী আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে ঘুষ ও ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের হাত থেকে রক্ষা পেতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করা হয়েছে।

প্রধান শিক্ষকদের পক্ষ থেকে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগে প্রকাশ, জাতির মেরুদন্ড গড়ার কাজে নিয়োজিত শিক্ষক সমাজ নিপীড়ন ও নিস্পেষণের শিকার হতে থাকলে শিক্ষা ব্যবস্থাসহ সমাজ অনিবার্য ধ্বংসের দিকে ধাপিত হতে বাধ্য। আশাশুনি উপজেলার শিক্ষক সমাজের উপর অত্যান্ত নিষ্ঠুরতার সাথে একাজটি করে চলেছেন শিক্ষা অফিসার ও অফিস সহকারী। তাদের নিষ্ঠুরতা, ঘুষ ও দুর্নীতির মধ্যে বদলী বাণিজ্যের তথ্য ইতিমধ্যে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ও অন লাইন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

বদলী বাণিজ্যে অফিস সহকারী আলমগীরের মাধ্যমে শিক্ষা অফিসার শামসুন্নাহার অন্তত ৩০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আলমগীর অত্যান্ত চাতুরতার সাথে একাজটি করার পাশাপাশি সহকারী শিক্ষা অফিসারসহ শিক্ষকদের সাথে অসদাচরণ করে আসছেন। অর্থ লোপাট ও বাণিজ্যের আরেকটি ক্ষেত্র প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা। এখানে দুর্নীতি করা হয়েছে লক্ষাধিক টাকা। টাকার বদৌলতে বঞ্চিত করা হয়েছে কোমলমতি অনেক শিশুকে।

অভিযোগে জানাগেছে, ২০১৮ সালে সমাপনী পরীক্ষায় একজন ছাত্রের (নাম ও রোল নং দেয়া হলো না) পিতামাতার কাছ থেকে তারা দু’জন ঘুষ গ্রহণ করেন ৫০ হাজার টাকা। শর্ত ছিল তাকে উপজেলা ১ম করে দিতে হবে। শর্তানুযায়ী উপজেলায় খাতা জমা হওয়ার পর ধর্ম খাতা অন্যকে দিয়ে লিখিয়ে নেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি একজন প্রধান শিক্ষকের (নাম দিলাম না) নজরে আসে। বাধ্য হয়ে শিক্ষা অফিসার পরবর্তীতে লিখিয়ে নেওয়া প্রশ্নের নাম্বার বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

শর্তানুযায়ী কাজ না হওয়ায় শিক্ষার্থীর মা ধর্ম খাতা পুনঃ নিরীক্ষণের আবেদন করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর। এবং কেন তার ছেলের নম্বর কমানো হলো তার প্রতিকার চান। সেখানেই বাধে বিপত্তি। জেলা শিক্ষা অফিসার তাকে তিনি কিভাবে কোড নম্বর জানলেন, কিভাবে বুঝলেন ইত্যাদি প্রশ্ন করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে।

জানাযায় ঐ ছেলে গণিতে ৮৭ নম্বর পেলেও তার খাতায় নম্বর কেটে ৮৯ এবং মার্কশীটে ৯৯ করা হয়েছে। তখন তড়িঘড়ি করে উপজেলা শিক্ষা অফিসার নিজেকে হেফাজত করতে পরীক্ষকদের বিরুদ্ধে কৈফিয়ত তলব করে ব্যাখ্যা চান। যতদুর জানাযায় তাদের স্বাক্ষর জাল করে নতুন মার্কশীট তৈরি করা হয়েছে।

এছাড়া একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২০ জনকে এ+ পাইয়ে দিয়ে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া অতি সম্প্রতি দপ্তরিদের বেতনের বরাদ্দ নেই এজন্য বরাদ্দ আনতে হবে এমন কথা বলে তাদের নিকট থেকে মাথাপিছু ১০০ টাকা করে অফিস সহকারি আদায় করেছেন।

অভিযুক্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসার সামছুন্নাহারের যোগাযোগ করা হলে তিনি খাতা লিখিয়ে নেওয়ার অভিযোগ এড়িয়ে গিয়ে বলেন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে আমি ও ইউএনও মহোদয়। কেন্দ্র থেকে সীল মেরে প্যাকেট করে খাতা আসে। খোলার সুযোগ নেই। ঘুষ বাণিজ্যের কথা তিনি অস্বীকার করেন।

এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক জুলহাজ উদ্দিন বলেন, কয়েকজন প্রধান শিক্ষক ও সম্ভবত সহকারী শিক্ষা অফিসারকে শোকজ করার পর আমরা তার যথাযথ জবাব দিয়েছি।