Spread the love

মোমিনুর রহমান, দেবহাটা প্রতিনিধি: দেবহাটার ভাঁতশালা সীমান্তের চোরাই ঘাট দিয়ে অবৈধপথে ভারত থেকে আসা চোরাচালানী মালামাল ধরিয়ে দেয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় দু’গ্রুপের পক্ষ থেকে পাল্টা পাল্টি অভিযোগ এনে পৃথক দুটি এজাহার দাখিল করা হয়েছে। বুধবার রাতে উপজেলার ভাঁতশালা গ্রামের আব্দুল হক বিশ্বাসের ছেলে হোসেন এবং এনামুল সরদারের ছেলে জাফর বাদী হয়ে দু’গ্রুপের পক্ষ থেকে পাল্টা পাল্টি হামলা-মারপিটের অভিযোগে দেবহাটা থানায় পৃথক দুটি এজাহার দাখিল করেন।

দাখিলকৃত এজাহার দুটিতে দু’গ্রুপের প্রায় ২০ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩ শতাধিক ব্যাক্তিকে আসামী করা হয়েছে। এর আগে অবৈধভাবে চোরাঘাট দিয়ে নিয়ে আসা ভারতীয় চোরাচালানী মালামাল বিজিবিকে দিয়ে ধরিয়ে দেয়াকে কেন্দ্র করে বুধবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ভাঁতশালা বাজারে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে চোরাকারবারীদের দুটি পের লোকজন। সংঘর্ষের এঘটনায় দু’গ্রুপের কমপক্ষে ১০/১২ জন আহত হয়।

উল্লেখ্য যে, কিছুদিন যাবৎ দেবহাটার বেজোরাটি গ্রামের মহিউদ্দীন খোকনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ছত্রছায়ায় ভাঁতশালা সীমান্তের বিশ্বাস পাড়া নামক স্থান দিয়ে ইছামতি নদীর চোরাই ঘাট ব্যবহার করে অবৈধভাবে ফেন্সিডিল, নিন্মমানের ভাইরাস যুক্ত গলদার রেনু, চোরাই গরু সহ অন্যান্য ভারতীয় মালামাল পাচার করে আসছে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হাড়দ্দাহ গ্রামের চোরাকারবারী রুমির ছেলে মঈমুর ইসলাম, ভাতশালা গ্রামের শরিফুল ইসলাম, নাংলা গ্রামের আসাদ, কোমরপুর গ্রামের সুইট সহ বেশ কয়েকজন চোরাকারবারী।

সম্প্রতি এক রাতের ব্যবধানে দেবহাটায় র‌্যাপিড এ্যকশান ব্যাটেলিয়ান (র‌্যাব)-৬ এবং নীলডুমুর ১৭ ব্যাটেলিয়ানের দেবহাটা ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যদের অভিযানে আটক হয়েছে প্রায় ৭শ বোতল ফেন্সিডিল। পাশাপাশি একাধিকবার আটক হচ্ছে এসব সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে নিয়ে আসা ভারতীয় নিন্মমানের গলদার রেনু। প্রতিরাতেই সীমান্তরক্ষী বাহিনী সহ অন্যান্য প্রশাসনকে বোকা বানিয়ে সীমান্তবর্তী এসব চোরাই ঘাট দিয়ে চিহ্নিত চোরাকারবারীরা অবাধে পাচার করে চলেছে ফেন্সিডিল সহ অন্যান্য চোরাচালানী মালামাল।

বুধবার দিবাগত রাতে ইছামতি নদী পার করে এ চোরাই ঘাট দিয়ে ভারত থেকে নিয়ে আসা চোরাচালানী সিন্ডিকেটের ২৪ পলিব্যাগ ভর্তি নিন্মমানের গলদার রেনুর মধ্য থেকে স্থানীয় বিজিবি সদস্যরা ৮ পলিব্যাগ গলদার রেনু আটক করে। এসব মালামাল আটকের ঘটনায় সন্দেহজনকভাবে ভাঁতশালার স্থানীয় হোসেন, মিল্টন সহ বেশ কয়েকজনের সাথে চোরাকারবারী সিন্ডিকেটের লোকজনদের কথা কাটাকাটি এবং এক পর্যায়ে দু’গ্রæপের মধ্যে বাঁধে সংঘর্ষ।

প্রায় ঘন্টাব্যাপী থেমে থেমে চলা সংঘর্ষ ও মারপিটে দু’গ্রুপের লোকজনদের মধ্যে পারুলিয়ার রবিউল ইসলাম রবি, তার ভাই ভাতশালা গ্রামের নুরা, ভাইপো শরিফুল, মোস্তফা, একই গ্রামের মিল্টন, হোসেন, সাইফুল, মতিয়ার, সবুজ, হাফিজুল, সখিপুরের আসাদুল সহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। খবর পেয়ে দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহার নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পরে দু’গ্রæপের পক্ষ থেকে পাল্টা পাল্টি অভিযোগ এনে দেবহাটা থানায় পৃথক দুটি এজাহার দাখিল করা হয়।

দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে পৌছে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া দু’গ্রুপকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে পুলিশ। পরে দুগ্রুপের লোকজন আলাদা আলাদা দুটি এজাহার দাখিল করেছেন। পুরো ঘটনাটি সুষ্ঠ তদন্ত পরবর্তী প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড সহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান ওসি।