আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা বিবিএম কলেজিয়েট স্কুলে শিক্ষকের বেত্রাঘাতে দুই ছাত্র আহত হয়েছেন।
শনিবার সকালে বুধহাটা বিবিএম কলেজিয়েট স্কুলের ৯ম শ্রেণির মানবিক বিভাগের ‘বি গ্রুপ’ ক্লাসে এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বুধহাটা বিবিএম কলেজিয়েট স্কুলের ৯ম শ্রেণির ছাত্র ও গুনাকরকাটি গ্রামের আবদার আলীর ছেলে সেলিম রেজাকে সরাসরি শাসনের নামে করা হয়েছে কঠিন বেত্রাঘাত।
সরকার সকল স্কুল, কলেজ, মাদরাসায় লাঠির ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছেন। কোমলমতি শিশুদের মনে ভীতি সঞ্চারের পরিবর্তে আদর, মমতা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে শিক্ষা দানের ব্যবস্থাকে দৃঢ় ভাবে অটুট রাখতে নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকদের এমন ব্যবহারে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
১/২টি নয় ৭/৮টি বেতের আঘাতে জর্জরিত করা হয়েছে তার ২ হাতের বাহু, কবজি ও পিঠের দিকে। একই সাথে একই ক্লাসের অভিষেককেও ৪/৫টি বেত্রাঘাত করা হয়েছে। মারার সময় শিক্ষকের ঔদ্ধত্ব্যপূর্ণ আচরণ ক্লাসের সকল শিক্ষার্থীকে হতবাক করে দিয়েছে। মুখবুঝে সহ্য করেছিল কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
সেলিম স্কুল ছুটির পর বাড়িতে গিয়ে কাউকে কিছু না বলে গায়ের জামা খোলার সময় তার মা লক্ষ্য করেন তার শরীরে রক্তজমা চিহ্ন। জিজ্ঞাসা করতেই বেরিয়ে আসে শিক্ষকের নির্মম আচরণের কাহিনী। তার পিতা আব্দার আলি মিস্ত্রী ছুটে আসেন স্কুলে। প্রধান শিক্ষক তখন স্কুলে ছিলেননা, পিতার চোখে মুখে ক্রন্দনের চিহ্ন দেখে অনেকে তার কাছে এসে হাজির হন। তিনি তার ছেলেকে কেন অমানবিক ভাবে পিটালেন জানতে চেয়ে যখন কাঁদছিলেন, তখন ঐ অমানবিক আচরণকারী শিক্ষক যুগোল সরদার সেখানে এসে পিতার প্রশ্নের উত্তর দিতে অক্ষম হয়ে কাকুতি মিনতি করতে শুরু করেন।
শিক্ষক যুগোল সরদার বেত্রাঘাতের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ছেলেরা গন্ডগোল করার কারনে একটু মেরেছিলাম। তবে মারাটা আমার উচিৎ হয়নি।
জানাগেছে শিক্ষক যুগোল সরদার অংকের ক্লাস নেওয়ার সময় একান্ড ঘটান। তবে বুধহাটা বিবিএম কলেজিয়েট স্কুলে এ ঘটনা প্রথম নয়। এর আগেও অনেকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। জেলা শিক্ষা অফিসার পর্যন্ত ঘটনার তথ্য গেলেও শেষ মেষ অন্ধকারে নিভে গিয়েছিল অমানবিক আক্রমের শিকার শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের অভিযোগ।
এ ব্যাপারে বুধহাটা বিবিএম কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মোবাইলে কল করলে তিনি রিসিভ করেন নি।
এব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ বাকী বিল্লাহ জানান, শিক্ষকদের লাঠির ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বুধহাটা স্কুলে বেত্রাঘাতের কোন অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি আমলে নিয়ে শিক্ষকদের এহেন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।