Spread the love

এসভি ডেস্ক: একসময় কৌতুক অভিনেতা বললেই চোখে ভেসে উঠতো হালকা গড়নের, কোঁকড়া চুলের এক হাস্যজ্জ্বল ব্যক্তির চেহারা। তার নাম আব্দুস সামাদ ওরফে টেলি সামাদ। সমানতালে অভিনয় করেছেন সিনেমায়, টেলিভিশনে। পেয়েছেন তুমুল জনপ্রিয়তা। সবাইকে হাসিয়েছেন যিনি, জীবনের শেষ বেলায় এসে জরা- ক্লান্তি আর একাকীত্বের মলিন হাঁসি হেসে চিরতরে বিদায় নিয়ে গেলেন আমাদের মাঝ থেকে।

৬ এপ্রিল, শনিবার দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেছেন এই অভিনেতা।

সবসময় বলতেন, আমিতো অভিনয় পাগল মানুষ। অভিনয়ের জন্য মন সবসময় টানে। মানুষের কাছে দোয়া চাই যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে আবার অভিনয়ে ফিরতে পারি। অভিনয় ছাড়া বাঁচা আমার পক্ষে অসম্ভব। 

২০১৫ সালের পর আর ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে পারেননি। আর তাই অভিনয় ছাড়া বেশি দিন বাঁচতেও পারলেন না তিনি। নজরুল ইসলামের পরিচালনায় ১৯৭৩ সালের দিকে ‘কার বৌ’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে এই অঙ্গনে পা রাখেন এই অভিনেতা। তবে তিনি দর্শকদের কাছে যে ছবিটির মাধ্যমে সর্বাধিক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন সেটি হলো ‘পায়ে চলার পথ’। 

এরপর অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করেছেন। অভিনয়ের বাইরে ৪০টির বেশি চলচ্চিত্রে তিনি গানও গেয়েছেন। 

শক্তিমান অভিনয় শিল্পীর বাহিরে তিনি একজন চিত্রশিল্পীও বটে, পড়াশোনাও করেছেন চারুকলা নিয়ে। ইচ্ছা ছিলো নিজের আঁকা ২০০ পেইন্টিং নিয়ে একটা প্রদর্শনী করবেন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে আর করা হয়ে উঠেনি। 

গ্রামীণ প্রেক্ষাপটের কাহিনী নিয়ে একটি নাটক নির্মাণের কথাও ভেবেছিলাম। তবে শারীরিক অবস্থার অবনতির জন্য আর কাজটা করা হয়ে ওঠেনি।

এছাড়া টিভিতে সরাসরি একটি গানের অনুষ্ঠান করারও পরিকল্পনা ছিলো তার। যেখানে তিনি নিজের ও ভারতের শিল্পীদের গাওয়া কিছু জনপ্রিয় গান গাইবেন বলে ভেবে রেখেছিলেন। আলাউদ্দিন আলীর সঙ্গে অনুষ্ঠানটি তিনি করতে চেয়েছিলেন। সেটিও আর করা হলো না টেলি সামাদের। 

২০১৫ সাল থেকে মৃত্যুর সময়টুকু, কেটে গেল তার বেপরোয়া শরীরের সঙ্গে যুদ্ধ যুদ্ধ করতে করতেই। এরপরও একটু সুস্থ বোধ করলেই এফডিসিতে যেতে ইচ্ছে করতো তার। সেখানে গেলেই পুরানো দিনের অনেক কথা মনে করে আরও সতেজ হয়ে উঠতে চাইতেন। খুব আক্ষেপ নিয়ে বলেছিলেন, জীবনের সময় কত দ্রুত চলে গেল টেরই পেলাম না।

১৯৪৫ সালের ৮ জানুয়ারি ঢাকার বিক্রমপুরে তিনি জন্মগ্রহণ টেলি সামাদ। ২০১৫ সালে তার অভিনীত সর্বশেষ ছবি মুক্তি পায় ‘জিরো ডিগ্রী’।