এসভি ডেস্ক: শ্যামনগর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত সাব-রেজিস্ট্রার মো. রফিকুল আলমের একগুয়েমি মনোভাবে গত পনের দিন ধরে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে এক দিকে যেমন দাতা-গ্রহিতারা পড়ছে চরম ভোগান্তিতে। অন্যদিকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে রাজস্ব থেকে। এতো কিছুর পরেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় দলিল লেখকগণ কলম বিরতি অব্যাহত রেখেছেন।
জানা যায়, হঠাৎ করে অতিরিক্ত দ্বায়িত্বে আসা কর্মকর্তা মো. রফিকুল আলম দলিল লেখকদের বলেন, দলিল সম্পাদনের জন্য দাতার দেওয়া সকল কাগজে লাইসেন্স নাম্বার দিয়ে প্রত্যেক দলিল লেখককে সত্যায়িত স্বাক্ষর করে দিতে হবে, পিঠ দলিলসহ সকল দলিলের মূল কপি দিতে হবে, হেবাবিল এওয়াজ দলিল ৩৩ শতকের বেশী পরিমান জমি রেজিস্ট্রি করা যাবেনা। এছাড়া কোন কাগজের ত্রুটি থাকলে সাথে সাথে সেই দলিল লেখকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, কোন দলিল লেখকের সহায়ক কোন দলিল নিয়ে অফিসে আসতে পারবে না।
এধরনের একাধিক সিদ্ধান্ত দলিল লেখকদের উপর চাপিয়ে দেওয়ায় দলিল লেখকগণ দলিল সম্পাদনা করতে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে দলিল লেখকগণ সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপ কামনা করে তার মাধ্যমে জেলা প্রশাসক ও জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে বিষয়টি উপস্থাপন করেন। কিন্ত এখনও পর্যন্ত এর কোন সমাধান না হওয়ায় দলিল রেজিস্ট্র্রেশন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
শ্যামনগর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি জি এম কামরুজ্জামান বলেন, হঠাৎ এ ধরনের সিদ্ধান্তের কারণে দাতারা যথাযথ কাগজপত্র দিতে না পারায় দলিল সম্পাদনা করতে পারছি না। জেলার অন্যান্য উপজেলায় এধরনের কোন কন্ডিশন নেই, অথচ আমাদের এখানে অফিসারের মনোভাব তার নিজের মত।
সিনিয়র দলিল লেখক মাহবুবুর রশিদ বলেন, দাতারা যে সকল কাগজপত্র আমাদের কাছে দেন, তাৎক্ষণিক সেগুলো পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না, কারণ একটি চেক দাখিলা পরীক্ষা করতে হলে, যেতে হয় ১৫-২০ কিলোমিটার দূরে তহশিল অফিসে। তহশিল অফিসে, বিএস/ডিপি খতিয়ান পরীক্ষা করবো, সেটেলমেন্টের অধিকাংশ মৌজার কাগজপত্র খুলনাতে, এসএ খতিয়ান পরীক্ষা করতে হলে যেতে হয় এসিল্যান্ড অফিসে। সেখানে তাদের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে কাগজটি পরীক্ষা করা যাবে কি না। তারপরও যত সম্ভব আমরা কাগজপত্র সঠিক না হলে, দলিল সম্পাদনা করি না। কিন্তু বর্তমান কর্মকর্তা যেভাবে কাগজপত্র চাচ্ছেন, সেভাবে দাতারা দিতে পারছে না, সেকারণে দলিল লেখা সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা-৪ আসনের এম পি জগলুল হায়দার বলেন, আমার এলাকার সাধারণ জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এটা আমি চাইবো না। ইতোমধ্যে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি এই কর্মকর্তাকে পরিবর্তন করে দ্রুত অন্য একজন কর্মকর্তা দেওয়া হবে।