এসভি ডেস্ক: ইসলামের পরিভাষায়, দোয়া শব্দের আক্ষরিক অর্থ ‘আবাহন’ বা ‘ডাকা’, যা একটি পদ্ধতিসিদ্ধ মিনতি প্রক্রিয়া। অভিজ্ঞ আলেমরা বলেন, দোয়া একটি আমল ও স্বতন্ত্র ইবাদত। দোয়া প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিবো।
রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দোয়া ইবাদতের মগজ। তিনি আরও বলেছেন, দোয়াই ইবাদত। (বুখারি ও মুসলিম)।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি, খণ্ড: ৫, পৃষ্ঠা: ৪৫৬, হাদিস নম্বর: ৩৩৭৩)।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যার জন্য দোয়ার দ্বার খোলা হয়েছে (অর্থাৎ যার দোয়া করার তাওফিক হয়েছে), তার জন্য রহমতের দ্বার খোলা হয়েছে। আল্লাহর কাছে যেসব দোয়া চাওয়া হয়, তন্মধ্যে তাঁর কাছে সর্বাধিক পছন্দীয় হলো আফিয়াত; অর্থাৎ নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের জন্য দোয়া করা।’ (জামে তিরমিজি, খণ্ড: ৫, পৃষ্ঠা: ৫৫২, হাদিস নম্বর: ৩৫৪৮)।
হজরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া ব্যতীত অন্য কোনো বস্তু তাকদিরের লিখনকে ফেরাতে পারে না এবং নেক আমল ছাড়া অন্য কোনো বস্তু হায়াত বৃদ্ধি করতে পারে না।’ (তিরমিজি, খণ্ড: ৪, পৃষ্ঠা: ৪৪৮, হাদিস নম্বর: ২১৩৯)। তিনি আরও বলেন, ‘তাকদিরের ফয়সালাকে কেবল দোয়াই পরিবর্তন করতে পারে।’
অনেক সময় আল্লাহতায়ালা দোয়াকারীর বৃহত্তর স্বার্থে দোয়া কবুলে বিলম্ব করেন। আল্লাহতায়ালা যেহেতু সর্বজ্ঞানী, তিনি জানেন যে, তার বান্দা যে বিষয়ে দোয়া করেছে তিনি তাকে বৃহত্তম আরেকটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য তা কবুল না করে পিছিয়ে দেন।
হতে পারে, বান্দা তখন দোয়া নাও করতে পারে অথবা বৃহত্তম স্বার্থের কথা তার চিন্তা চেতনায় আসে নাই, কিংবা পরকালে বৃহত্তর বিপদে রক্ষা করা ও মুক্তির জন্য তার ওই দোয়াকে দুনিয়ার জন্য কবুল করা হয় না। এর পরিবর্তে পরকালে তাকে উত্তম বিনিময় প্রদান করা হবে।
এসব কারণে আল্লাহতায়ালা কোনে কোনো সময় দোয়া বিলম্বে কবুল করেন। এ জন্য দোয়াকারীর নিরাশ না হওয়া চাই।