Spread the love

এসভি ডেস্ক: পুরো ভবন জ্বলছে, বাহিরেও জ্বলছে। সবাই ছুটাছুটি করছেন বাঁচতে। কিন্তু রিফাত রয়ে গেলেন, কেননা অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রিয়া যে নামতে পারছেন না। তাই ভালোবাসার মানুষ দুটি পরস্পরকে আলিঙ্গন করে আগুনেই জ্বলে মরলেন দম্পতি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে রাখা স্বজনদের লাশ খুঁজছেন সবাই। এখানে বন্ধু-বান্ধবী রিফাত ও রিয়াকে খুঁজছেন আল-আকসার সাজিদ। 

সাজিদে জানালেন, ‘ভালোবেসে তারা দুই বছর আগে বিয়ে করেন। তারা ওয়াহিদ ভবনে ছিলেন। রিয়া গর্ভবতী এবং অসুস্থ ছিলেন। যখন আগুন লাগে তখন তাদের সঙ্গে পরিবারের কথা হয়। ওই সময় রিফাত জানায় রিয়া নামতে পারছে না। স্ত্রীকে নামাতে না পারায় সেও নামেনি। ফলে দুইজনই পুরে মারা গেছে।’

নিহতের স্বজনের আহাজারিতে চকবাজার থেকে ঢামেক মর্গ পর্যন্ত হৃদয়বিদারক চিত্র। শুধু চকবাজার-ঢামেক নয়, এ ঘটনায় গোটা দেশই স্তব্ধ। মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনায় শোকে কাতর পুরো জাতি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে গিয়ে দেখা যায়, শুধু লাশ আর লাশ। সারি বেঁধে লাশগুলো রাখা হয়েছে বারান্দায়। দেখে মনে হচ্ছে লাশ রাখার ঠাঁই হচ্ছে না হাসপাতালে। বেশিরভাগ নিহতের শরীর পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। চেহারা বোঝা মুশকিল। ডিএনএ টেস্ট ছাড়া লাশ শনাক্ত করা মুশকিল হয়ে পড়বে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান জানান, আমরা আগে বলেছিলাম ৭০ জন নিহত হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রাপ্ত বিভিন্ন খবরে বুঝা যাচ্ছে নিহতের সংখ্যা ৮০ বা ৮১ হতে পারে। তবে এখনো পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কারণ একটি ডেড বডির জায়গায় দু-তিন টি ডেড বডিও রাখা হয়েছে।’

নিহত ৮১ জনের মধ্যে ৪১ জনের লাশ শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে দুইজন নারী, দুই শিশু ও ৩৭জন পুরুষ। যাদের শনাক্ত করা গেছে তাদের মরদেহ হস্তান্তর করা হচ্ছে। ঢাকা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তাদের হস্তান্তর করা হচ্ছে।