Spread the love

শেখ বাদশা, আশাশুনি প্রতিনিধি: বাংলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে আশাশুনি উপজেলার টু সাতক্ষীরা সদরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া বেতনা নদী। বর্তমানে নদীতে পলি জমতে জমতে নাব্যতা হারাতে বসেছে বেতনা। অতিদ্রুত খনন করা না হলে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে বেতনা নদী।

এছাড়া আশাশুনি উপজেলা টু সাতক্ষীরা সদরের নদী লাগোয়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়া আশঙ্খাতো আছেই। এ বেতনা নদীর দুই তীরে বহু চাষাবাদ জমি ও মৎস ঘের আছে। যা এ নদীর উপর আস্থাশীল। নদীটি বিলিন হয়ে গেলে এসকল এলাকার মানুষের মাঝে নেমে আসবে অভাব ও দূর্ভোগের কালো ছায়া।

সরেজমিন যেয়ে জানা গেছে, যশোরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে উৎপন্ন হয়ে শার্শা উপজেলার নাভারনের কাছ দিয়ে এ বেতনা নদী প্রবাহিত হয়ে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার মধ্য দিয়ে এঁকে বেঁকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিনারপোতা থেকে

আশাশুনি উপজেলার কয়েকটি গ্রামের বুক চিরে খোলপেটুয়া নদীতে গিয়ে মিশেছে এক সময়কার প্রমত্তা বেতনা নদী। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা “পাউবো” কর্তৃক বেতনা নদীর প্রদত্ত। নদীটির পরিচিতি নম্বর নং ৬৪। আবহমানকাল থেকে বেতনা নদীটির দৈর্ঘ্য ১৯১ কিলোমিটার (১১৯ মাইল), গড় প্রস্থ ৫৫ মিটার। কালের বিবর্তনে বেতনা নদী আজ হারিয়ে নদীটির চার ভাগের তিনভাগই ভরাট হয়ে নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে গেছে।

এছাড়া সাতক্ষীরা সদরের বিভিন্ন এলাকায় নদীটি একেবারেই শুকিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে এবং আশাশুনির অনেক স্থানে ভাটার সময় নদী হেটেই পার হয় সাধারণ মানুষ। বেতনা নদী তার নাব্যতা হারানোর ফলে লোকালয়ের মৎস্য ঘের, খাল, বিলের থেকেও নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে উচু হওয়ার কারণে বর্ষী মৌসুমে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন হতে পারেনা। উপরন্ত বর্ষা মৌসুমে সকল খালের গেটের স্লুইচ বন্ধ করে রাখতে হয়, যাতে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতে না পারে।

স্থানীয়রা বলেন, বেতনা নদীর উভয় পাড়ে নির্মান হওয়া ইটভাটা গুলো তাদের ইচ্ছামত নদীর চর দখল করে সেখানে নির্মাণ করছে কাঁচা ইট তৈরীর খামার। অন্যদিকে স্থানীয় কিছু ভূমিদস্যুরা ইজারা ছাড়াই যে যার মত বেড়ীবাঁধ দিয়ে দখল করে নিচ্ছে নদীর চর।

এমতাবস্থায় চলতে থাকলে কোন একদিন বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে মুছে যাবে বেতনা নদীর নাম। নদীটি যদি অতি দ্রুত খনন করা না হয় তবে সামনের বর্ষা মৌসুমে আশাশুনি উপজেলা ও সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার আশংকা করছে স্থানীয় সচেতন মহল।

এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট এলাকা গুলো প্লাবিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে ও মানচিত্রের বুকে নদীটি বাঁচিয়ে রাখতে বিষয়টি আমলে নিয়ে অতিদ্রুত খনন কাজ শুরু করতে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নদী মাতৃক এলাকবাসী।