Spread the love

দেবহাটা প্রতিনিধি: দেবহাটার সখিপুরে হাফিজা খাতুন (৪৫) নামের এক অসহায় বিধবা মহিলা ও তার ছেলেকে ভিটে ছাড়া করতে শুক্রবার সরকারী ছুটির দিনে বসত ভিটার সীমানায় মাটি ফেলে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভুক্তভোগী হাফিজা খাতুনের ছেলে আব্দুর রহমান বলেন, আমার বাবা দেবহাটার সখিপুর গ্রামের মোক্তার সরদারের ছেলেপ মৃত আলম বারী সরদারের নামীয় ও রেকর্ডীয় সখিপুর মৌজার ১১১১ দাগের (হাল ১৯৪৮খতিয়ানের) ১২ শতক জমিতে ২০ বছর ধরে ভোগদখল ও বসবাস করছে। সম্প্রতি ওই জমিটি নজর পড়ে স্থানীয় আফছার আলী মোল্যার ছেলে জুয়েলার্স ব্যবসায়ী লতিফুর রহমান বাবুর। বাবা ও মায়ের মধ্যকার পরিবারিক গোলযোগের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিগত বছর দেড়েক আগে তার বাবা আলম বারী সরদারকে ভুল বুঝিয়ে গোপনে তাদের ওই বসবাসের জমি নিজের নামে লিখে নেয়।

বিষয়টি জানাজানি হলে অসহায় হাফিজা খাতুন বাদী হয়ে সাতক্ষীরার বিজ্ঞ আদলতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটির বিষয়ে তদন্তসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশনা দিলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন রতনের দেয়া প্রতিবেদন সহ অন্যান্য কাগজপত্র পর্যালোচনার ভিত্তিতে বাদী হাফিজা খাতুনের পক্ষে দখলস্বত্ত বজায় রাখার রায় দিয়ে মামলাটি নিষ্পত্তি করে আদালত।

কিন্তু আদালতের রায়কে উপেক্ষা করে গত ২রা জুলাই ভাড়াটে লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে বাদী হাফিজার বাড়ীর সীমানা প্রাচীর ভেঙে গোটা সম্পত্তিটি অবৈধভাবে জবর দখলের চেষ্টা করলে আবারো দেবহাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন হাফিজা খাতুন।

অভিযোগের ভিত্তিতে তাৎক্ষনিকভাবে তৎকালীন দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী কামালের নির্দেশে মূল অভিযুক্ত লতিফুর রহমান বাবু সহ তার অপর দুই সহযোগী হাফিজুর রহমান ও আব্দুল খালেককে আটক করে পুলিশ।

ঘটনাটি সুষ্ঠ সমাধানের উদ্যোগ নিয়ে সখিপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফারুক হোসেন রতন পরদিন অর্থাৎ ৩রা জুলাই উভয় পক্ষকে নিয়ে শালিসের মাধ্যমে উক্ত সম্পত্তির বসত বাড়ীর ৩ শতক জমি বাদী হাফিজা খাতুন ও ৯ শতক জমি লতিফুর রহমানের ভোগদখলে দিয়ে এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে ৩শ টাকা মুল্যের নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে উভয় পক্ষের স্বাক্ষর পরবর্তী চুড়ান্ত নিষ্পত্তি করেন।

সেখান থেকে শান্তিপুর্নভাবে হাফিজা খাতুনের পরিবার জমিটিতে বসবাস করে আসলে গতকাল শুক্রবার আবারো হাফিজা খাতুনকে ভিটে ছাড়া করতে অভিযুক্ত লতিফুর রহমান বাবু অসহায় পরিবারের সীমানায় মাটি ফেলে জমিটি দখলে নেয়ার চেষ্টা চালাতে থাকে।

এসময় হাফিজা খাতুনের ছেলে আব্দুর রহমান বাঁধা দিলেও তাতে কর্নপাত না করে বরং তাদেরকে মরিপিট সহ ভিটেছাড়া করার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে লতিফুর রহমান বাবুর বিরুদ্ধে।

এমতাবস্থায় নিজেদের একমাত্র সম্বল উক্ত জমিটিতে সুষ্ঠ ও শান্তিপুর্নভাবে বসবাস সহ জবর দখলের প্রচেষ্টাকারী লতিফুর রহমান বাবুর ষড়যন্ত্রের প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফারুক হোসেন রতন সহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগীতা চেয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।

এদিকে জমি দখলের বিষয়ে অভিযুক্ত লতিফুর রহমান বাবুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘আমার জমি,আমি দখল করছি’।