Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী হাড়দ্দাহ গ্রামে মরণব্যাধি ক্যান্সার সারানোর নামে ধইঞ্চাসহ বিভিন্ন বিষাক্ত গাছের পাতা ও শিকড় খাইয়ে হাজারো মানুষকে প্রতিনিয়ত সর্বশান্ত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে দেবহাটা-সাতক্ষীরা সদরের সীমান্তবর্তী হাড়দ্দাহ গ্রামের আব্দুল আজিজ সরদারের ছেলে সাইফুল্লাহ সরদারের বিরুদ্ধে।


সম্প্রতি দেবহাটার চাঁদপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে বাঁচার আশায় প্রতারক সাইফুল্লাহর দেয়া বিষাক্ত গাছের পাতা ও শিকড়ের রস খায়। এতে রোগ না সেরে বরং রোগের তীব্রতা বেড়ে যায় এবং অবশেষে মারা ওই ভূক্তভূগী। এরপরই ভুক্তভোগীদের মুখ থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করে প্রতারক সাইফুল্লাহর প্রতারনার তথ্য। 

নাম প্রকাশ না করে স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, মাস ছয়েক আগেও দিনমজুর ছিলো সাইফুল্লাহ। কিন্তু দিনমজুরের কাজে সংসারে স্বচ্ছলতা না আসায় রাতারাতি স্বপ্নে ক্যান্সার মুক্তির গাঁছড়া ঔষধ পেয়েছে এমন প্রচার চালায় সাইফুল। এখন জিরো থেকে রাতারাতি হিরো সে। জেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল ও জেলার বাইরে থেকে প্রতিদিন বাঁচার আশা নিয়ে আসা মরণব্যাধি ক্যান্সারসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত এক থেকে দেড় হাজার মানুষকে ধইঞ্চাসহ বিভিন্ন গাছের পাতা ও শিকড় খাইয়ে মোটা অংকের টাকা নিচ্ছে সাইফুল।


স্থানীয়রা আরো জানান, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেয়ে একবার সদর থানা পুলিশ প্রতারক সাইফুল্লাহর বাড়ীতে গিয়ে তার অবৈধ ব্যবসা বন্ধ সহ প্রতারক সাইফুল্লাহকে গ্রেফতারের চেষ্টা করে পুলিশ।

 
এদিকে প্রতারনার টাকা ভাগবাটোয়ারার চুক্তিতে তাকে সেল্টার দেয়া শুরু করে ওই এলাকার নূর আলী, দিন ইসলামসহ কয়েকজন স্থানীয় প্রভাবশালী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতারক সাইফুলের ঘনিষ্ট এক বন্ধু প্রতিনিধিকে বলেন, গভীর রাতে তাকে সাথে নিয়ে প্রতারক সাইফুল বাড়ীর পাশের বাগান থেকে ধইঞ্চা সহ বিভিন্ন গাছের সাদা আঠালো পাতা, শিকড় তুলে এনে বেটে পেষ্ট করে। ভোররাত থেকে দিনব্যাপী বাড়ীর উঠানে লাইনে দাড়ানো হাজারো মানুষকে বিষাক্ত এসব পাতা ও শিকড়ের রস খাইয়ে মোটা টাকা হাতিয়ে নেয় সে। তার দেয়া এসব বিষাক্ত রস খেয়ে মরণব্যাধি ক্যান্সার তো দূরের কথা কোন অসুখই ভালো না হয়ে বরং এ রস খাওয়ার কারনে অসুখের মাত্রা বেড়ে গিয়ে দেবহাটার চাদপুরের একজন সহ অন্যান্য এলাকায় কয়েকজন ইতোমধ্যেই মারা গেছে বলে জানান তিনি।

 
তথ্যানুসন্ধানে ও ভুক্তভোগীদের দেয়া তথ্যে জানা জানা গেছে, সপ্তাহের প্রতি শনিবার-রবিবার ও সোমবার তিনদিনে মরণব্যাধি ক্যান্সার সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তিন থেকে সাড়ে চার হাজার অসহায় সহজ সরল মানুষ বাঁচার আশায় চিকিৎসা নিতে এসে প্রতারক সাইফুলের খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। 

এব্যাপারে জানতে চাইলে প্রতারক সাইফুল্লাহ তার প্রতারনার কথা স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, ভাই আপনারা খবরটি পত্রিকায় প্রকাশ করে আমার ব্যবসার ‘বাড়া ভাতে ছাই’ দিবেন না। আমি আপনাদের মোটা টাকা মাসোয়ারা দিতেও রাজি।


তাই অবিলম্বে প্রতারক সাইফুল্লাহকে গ্রেফতারসহ তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা পুলিশ সুপারের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ভুক্তভোগীরা।