এসভি ডেস্ক: নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসন ও বিচার বিভাগ বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য একজোট হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘ইতোমধ্যে এই নির্বাচন একটি তামাশা ও প্রহশনে পরিণত হয়েছে। গত ১০ বছর আমরা যে একটি স্বৈরাচার সরকারের অধীনে বসবাস করছি সেটি থেকে জনগণের মুক্তির জন্য আমরা আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু এখন নির্বাচনের আদৌ পরিবেশ আছে কিনা সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন প্রশাসন বিচার বিভাগ দেশকে ধ্বংস করার জন্য একজোট হয়েছে। আমরা অত্যন্ত শঙ্কিত ‘
শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ১১টায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন (ইসি), সরকার এমনকি বিচার বিভাগ, বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য এক জোট হয়েছে। এটা আমাদের কাছে শুধু বিস্ময়কর নয়, আতঙ্কের। এই কথা আমরা অত্যান্ত দায়িত্ব নিয়ে বলছি। আমরা আশা করেছিলাম তফসিল ঘোষণার পর বিরোধী দল তাদের প্রার্থীদের নিয়ে প্রচারণায় নামতে পারছে। নির্বিগ্নে প্রচারণা করতে পারছে। মামলা আপাতত স্থগিত থাকছে। কিন্তু তা হয়নি। দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে সেই অবস্থায় দেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি জায়গায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। এমনকি আমরা কাকে দলীয় মনোনয়ন দেবো তাও হাইকোর্ট থেকে বলে দেয়া হয়েছে। তাহলে কিভাবে বলবো হাইকোর্ট থেকে ন্যায় বিচার পাচ্ছি?’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের এই ভাবে বাতিল করে দেয়া হয় তাহলে কি মানুষ মনে করবে না এখন বিচার বিভাগও সরকারের ইচ্ছায় কাজ করছে? এভাবে বিচার বিভাগের ওপর থেকে মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলছে। আমাদের ১৫ জন প্রার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সরকার আবারও বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করতে চাচ্ছে।’
‘বিএনপির টাকা নিন নৌকায় ভোট দিন’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের টাকা কোথায়? জায়গা-জমি, বাড়ি-ঘর বিক্রি করার অবস্থা হয়ে গেছে। আর প্রধানমন্ত্রী এই কথা কীভাবে বলতে পারেন? সম্পূর্ণ অনৈতিক, টাকা নিন ভোট দিন এর চাইতে অনৈতিক কথা আর কি হতে পারে? অনৈতিক পরামর্শ দেয়া অপরাধ। আমি দাবি করবো নির্বাচন কমিশন এই গুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবেন।’
সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নির্বাচন করতে চাই বলেই নির্বাচনে এসেছি। উচ্চ আদালতের কাছে আবেদন করছি, দয়া করে আপনারা ন্যায় বিচার করুন। গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য একটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদেরকে বেআইনি ভাবে বাতিল করাটা সঠিক হবে না। ইসিকে আবারও বলতে চাই আপনাদের দায়িত্বটা পালন করুন। রাষ্ট্র, সংবিধান আপনাদেরকে যে অধিকার দিয়েছে তা প্রয়োগ করুন। ২৪ তারিখে সেনাবাহিনী মোতায়েন হবে, বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে, প্রশাসনেন সকলের কাছে আমাদের আহ্বান এই দেশ আমাদের সকলের, জনগণ এই দেশের মালিক। গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য রাষ্ট্র ও জনগণ যে দায়িত্ব দিয়েছে তা পালন করুন। আপনারা কোনো দলের কর্মকর্তা বা কর্মচারী নন।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস-চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল কাইয়ূম, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।