এসভি ডেস্ক: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ৬টি সংসদীয় আসনে ইভিএম ব্যবহার করে ভোগগ্রহণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব (ইসি) হেলালুদ্দীন আহমদ।
শনিবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁয়ে নির্বাচন ভবনে ইভিএম ব্যবহার সংক্রান্ত কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা জানান। সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাসহ চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন।
তবে ৩০০টি আসনের কোন ৬টিতে ইভিএম ব্যবহার হবে তা এখনও ঠিক হয়নি জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘দৈবচয়নের ভিত্তিতে আগামী ২৮ নভেম্বর এই আসনগুলো ঠিক করা হবে।’
দেশে বর্তমানে ১২টি সিটি করপোরেশন আছে। ইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ সিটি করপোরেশন এলাকার ৬টি আসনে ইভিএম ব্যবহার হবে।
ইসি সচিব বলেন, ‘আজ ৪০তম কমিশন সভা হয়েছে। সেখানে ইভিএম ব্যবহারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
কতটি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে- জানতে চাইলে হেলালুদ্দীন বলেন, ‘এভারেজে যদি শহর এলাকায় ১৫০টি কেন্দ্রে (প্রতি আসনে) হয়, তাহলে প্রায় ৯০০টি কেন্দ্র।’
কমিশনের ভাষ্য মতে, এবার মোট ৪০ হাজারটির মধ্যে ৯০০টির মতো কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে। এই ৯০০ কেন্দ্রে কোনও ব্যালট পেপার থাকবে না।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় বসাতে নির্বাচন কমিশন ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে কর্মকর্তাদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গোপন বৈঠক করেছে বলেও অভিযোগ দলটির। কথিত ওই বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন রিজভী।
সাংবাদিকরা এসব বিষয়ে ইসি সচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আমি এসব বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই। এসব সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি বলবো এ ধরনের মিথ্যা দিয়ে যেন প্রপাগাণ্ডা না ছড়ানো হয়।’
এর আগে শনিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘গত ২০ নভেম্বর মঙ্গলবার রাতে ঢাকা অফিসার্স ক্লাবের চার তলার পেছনের কনফারেন্স রুমে এক গোপন মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালউদ্দীন আহমদ।’
সাংবাদিকদের করা এ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে ইসি সচিব বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এবং আপনারা এখানে থাকেন আপনারা জানেন। আমি এখানে (ইসি ভবন) প্রতিদিন রাত ৮টা ৯টা পর্যন্ত থাকি। সংবাদ সম্মেলনে যে কথা বলা হয়েছে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা একটা অভিযোগ। নির্বাচন কমিশন সচিব প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা। তিনি নির্বাচন কমিশনের সকল ধরনের আদেশ নির্দেশ পালন করেন। আমিও ব্যতিক্রম নই।’
হেলালুদ্দীন আরও বলেন, ‘বিএনপির এহেন বক্তব্যের আমি তীব্র নিন্দা জানাই। এ ধরনের মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা যাতে আর না ছড়ানো হয় এ ব্যাপারে তাদেরকে সতর্ক থাকতে বলবো।’
চট্টগ্রামের এক গোপন বৈঠকে ইসি সচিবের উপস্থিতি ছিল বলেও অভিযোগ তুলে বিএনপি। এ অভিযোগকেও মিথ্যা বলে দাবি করেন ইসি সচিব।
ইসি সচিবের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে বিএনপি নির্বাচন কমিশন সে বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে হেলালুদ্দীন বলেন, ‘আগামীকাল কমিশনে বিষয়টি তোলা হবে। মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) যে সিদ্ধান্ত দেন সে অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’