Spread the love
এসভি ডেস্ক:  সুন্দরবনের পূর্ব বনবিভাগ দুবলার চরে আজ থেকে শুরু হচ্ছে দুবলার মেলা। আসলেই দুবলার মেলা নামে পরিচিতি থাকলেও এটি মুলত সনাতন ধর্মবলম্বীদের রাস পূজা। তাই এ মেলার আরেক নাম রাস মেলা। যা আজ থেকে শুরু হয়ে চলবে ২৩ শে নভেম্বর পর্যন্ত। আজ মেলায় যাওয়ার জন্য দর্শনার্থী ও পূনার্থীরা রওনা দিয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে বনবিভাগের কঠোর নিরাপত্তা ও অনুমতি সহ তাদের বেধেঁ দেওয়া নিদিষ্ট নৌ রুট মাফিক এ মেলার যাওয়া এবং আসা বাধ্যবাধকা রয়েছে। মূলত মেলাটির আয়োজক ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা মেজর জিয়া। তিনি মৃত্যুবরণ করায় তার ছোট ভাই এস,এম, কামাল হোসেন এবার মেলায় সার্বিক তত্তাবধানে থাকবেন বলে বিভিন্ন সুত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। 
দুবলারচর বাংলাদেশ অংশের সুন্দরবন দক্ষিনে কটকার দক্ষিণ পশ্চিমে এবং হিরণ পয়েন্টের দক্ষিণ পূর্ব অবস্থিত একটি দ্বীপ যা চর নামে হিন্দুধর্মের পূণ্যস্থান, রাসমেলা এবং হরিণের জন্য বহুল পরিচিত। এই চরে মোট আয়তন ৮১ বর্গমাইল। আলোরকোল, কোকিলমনি, হলদিখালী, কবরখালী, মাঝেরকিলা, অফিসকিলা, নারকেলবাড়িয়া, আমবড়িয়া এবং শেলার চর নিয়ে দুবলারচর গঠিত।
প্রতিবছর কার্তিক মাসে (খ্রিস্টিয় নভেম্বর) হিন্দু ধর্মবলম্বীদের রাসমেলা এবং পূণস্নানের জন্য দ্বীপটি বিখ্যাত। যদিও বলা হয়ে থাকে ২০০ বছর ধরে এ রাসমেলা চলছে তবে জানা যায় ১৯২৩ খীষ্টাব্দে হরিচাঁদ ঠাকুরের একবনবাসী ভক্ত, নাম হরি ভজন (১৮২৯-১৯২৩) এই মেলা চালু করেন। প্রতিবছর অসংখ্যা পূণার্থী রাসপূর্ণিমাকে উপলক্ষ করে এখানে সুমুদ্রে স্নান করতে আসেন।
দুবলারচরে সুর্যোদয় দেখে ভক্তরা সমুদ্রে জলে ফল ভাসিয়ে দেন। কেওবা বাদ্র যন্ত্র বজিয়ে ভজন কীর্তন গেয়ে মুখরিত করেন চারপাশ। দুবলার চরে রাসমেলায় স্থানিয় লোকজন ছাড়াও দূরদুরন্তের শহরবাসী এমন কি বিদেশী পর্যটকরাও স্বতঃস্ফুতভাবে অংশ নিয়ে থাকেন। তিন দিন ব্যাপি এ মেলায় অনেক বিদেশী পর্যটকদের সমাগম হয়। সাতক্ষীরা রেঞ্জের 
বুড়িগোয়ালিনি ষ্টেশন কর্মকর্তা কে এম কবীর হোসেন জানান দুবলার চরে রাসমেলায় যেতে ৩টি রুট নির্ধারণ করা হয়েছে। তারমধ্যে বুড়িগোয়ালীনী, থেকে কোবাদক হয়ে বাটুল নদী, বোয়াল নদী, পাটকোষ্টা খাল হয়ে হংসরাজ নদী দিয়ে দুবলারচর, ২য় কদমতলা থেকে ইছামতি নদী, দোবেকি, আড়পাঙ্গাশিয়া ও কাকা দোবেকি হয়ে দুবলারচর এবং ৩য় কৈখালী থেকে মাদার গাং, কোবরা খালী খাল, ভারানী খাল, আড়পাংশিয়া ও কাকা দোবেকি হয়ে দুবলারচর। 
তিনি আরও জানান, চোরা শিকারীদের হরিণ শিকার রোধে কঠোর নজরদারী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতায় বুড়িগোয়ালীনি, মুন্সীগঞ্জ, কৈখালী, কদমতলা ও হরিনগর থেকে শতাধিক ট্রলার রাসমেলা উপলক্ষে যাত্রা করেছে। এসময় ৫০/৬০ হাজার পূনার্থী রাস মেলা উদযাপন করবে। বনবিভাগ, র‌্যাব, বিজিবি ও কোষ্টগার্ডের সমন্বয়ে নিরাপত্তা বলায় গড়ে তোলা হয়েছে।