এসভি ডেস্ক: কিশোরীটির পরনে স্কুল ড্রেস। তাতে ছোপ ছোপ রক্ত। তাকে জড়িয়ে ধরে যুবকটিও ছিল রক্তাক্ত। নির্জন রেললাইনের পাশের ঝোপের ভেতর তাদের এভাবে পড়ে থাকতে দেখে দিশেহারা এলাকাবাসী। বুদ্ধি না হারিয়ে কয়েকজন ছুটলো থানায়। পুলিশ এসে যখন তাদের উদ্ধার করে, ততোক্ষণ মেয়েটির হৃদ-স্পন্দন থেমে গেছে। তীব্র রক্ত রক্তক্ষরণের পর মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে টিকেছিল ছেলেটি।
শনিবার বিকেলে এই হৃদয়বিদার ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার দক্ষিণ ভূর্ষি ইউনিয়নের বেলতল রেললাইনের পাশে। খবর পেয়ে পটিয়া থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই স্কুলছাত্রীকে মৃত ঘোষণা করেন। আর মুমুর্ষ অবস্থায় থাকা যুবকের চিকিৎসার জন্য
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে (চমেক) নিয়ে যান। জরুরী বিভাগে মুমূর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করে নেন।
গণমাধ্যমকে ওই চিকিৎসক জানান, মেয়েটির পেটে একাধিক ছুড়িকাঘাত রয়েছে। ছেলেটিরও ক্ষতবিক্ষত, তার গলার একাংশে ধারালো ছুড়ির আঘাত করা রয়েছে। অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে শ্বাসনালী। তাকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাটির তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে মাঠে নেমেছেন পটিয়া থানার এসআই আলমগীর হোসেন। তিনিবলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বিষয়টি প্রেমঘটিত। তবে এর পেছনে অন্য কোনা হাত আছে কিনা তা জানতে ছেলেটি সুস্থ্ হয়ে ওঠা পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে।
এরই মধ্যে পুলিশ তাদের পরিচয় উদ্ধার জানতে পেরেছে জানিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, মৃত কিশোরীর নাম রিমা আকতার (১৩)। সে উপজেলার পূর্ব হাইদগাঁও গ্রামের মাহদাম পাড়ার মঞ্জুরুল আলমের কন্যা। সে হাইদগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী বলে জানা গেছে। আর মারাত্মক আহত যুবকের নাম নজরুল ইসলাম মাসুদ (২২)। সে পৌর এলাকার উত্তর গোবিন্দারখীল গ্রামের (ফইল্ল্যাতলী) মৃত আবুল কালামের পুত্র।
পটিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ বলেন, ঘটনাটি প্রেমঘটিত নাকি অন্যকিছু। তা দুই পরিবারের সঙ্গে কথা বললে জানা যাবে।
ওসি আরো জানান, আহত নজরুল ইসলাম মাসুদ চমেক হাসপাতালের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে। তার গলায়ও ধারালো ছুরির আঘাত থাকায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।