এস ভি ডেস্ক: চাকরিতে কোটা সংস্কার, বাতিলের বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে দ্রুত প্রতিবেদন চেয়েছে ক্ষমতাসীন জোট ১৪ দল। তারা বলছে, এই বিষয়টি নিয়ে চক্রান্ত চলছে। তারা যেন সুযোগ নিতে না পারে, তাই প্রতিবেদনটি দ্রুত আসা উচিত।
সোমবার (১৭ জুলাই) আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে জোটের বৈঠক শেষে ১৪ দলের মুখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এই দাবি করেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, ‘একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে একটি মহল একের পর এক চক্রান্ত করছে। কোন ইস্যু না পেয়ে কোটা সংস্কার ইস্যু নিয়ে তারা মাঠে নেমেছে।’
‘প্রধানমন্ত্রী যেহেতু একটি পর্যায়ে সংসদে বলেছিলেন কোটা রাখবেন না। তারপরেও তিনি একটি কমিটি করে দিয়েছেন কেবিনেট সচিবের নেতৃত্বে, সেই কমিটি কাজ করছে।’
সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়ে সুপারিশ দিতে গত ২ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন হয়। তাদেরকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। গঠনের ছয় দিনের মাথায় গত ৮ জুলাই কমিটির প্রথম বৈঠক হয়। এতে সাত দিনের মধ্যে দেশ-বিদেশে কোটা ব্যবস্থা এবং বাংলাদেশে কোটা সংস্কার নিয়ে নানা সময় নানা সুপারিশ যোগাড় করে আবার বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়।
তবে এসব প্রতিবেদন ও সুপারিশ যোগাড় হয়েছে কি না, তা এখনও জানানো হয়নি আর কোটা কমিটি দ্বিতীয় বৈঠকে আর বসেনি। ১৫ কার্যদিবস অর্থাৎ ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়া সম্ভব কি না, এই বিষয়টি নিয়েও কমিটির কেউ কিছু বলেননি।
নাসিম বলেন, ‘আমরা কেবিনেট সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটিকে ১৪ দলের পক্ষ থেকে অনুরোধ করতে চাই। আপনাদের কাজটি শেষ করে দ্রুততার সঙ্গে প্রতিবেদন দেন। কেউ যেন সুযোগ নিতে না পারে, কেউ যেন ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পারে।’
সরকারি চাকরিতে কোটা বাংলাদেশের জন্মের পর থেকেই ছিল। বরং শুরুতে ৮০ শতাংশ কোটা থাকলেও পরে তা কমিয়ে ৫৬ শতাংশ করা হয়। তবে এ নিয়ে আন্দোলনের শুরু হয় ৯০ দশকে মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা তাদের সন্তানদেরকে দেয়ার পর থেকে। তখন কিছু সংগঠন মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের দাবি নিয়ে রাজপথে নেমে ব্যর্থ হয়। এরপর ২০১৩ সালে আরেক দফা আন্দোলনে নেমে বিফল হয় তারা। তবে এবার কোটার নাম উল্লেখ না করে সব মিলিয়ে কোটা ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবিতে মাঠে নামে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’।
গত ৮ এপ্রিল থেকে ঘটা নানা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ১১ এপ্রিল সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোনো কোটা থাকবে না।’ তবে পরে জানা যায়, ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণের বিষয়ে উচ্চ আদালতের রায় আছে। গত ১১ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সংবাদ সম্মেলন করে এবং পরদিন প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে এই রায়ের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, ‘এই কোটা বাতিল হলে আদালত অবমাননায় পড়বেন তিনি।’
নাসিম বলেন, ‘কোটা সিস্টেম আমাদের সংবিধানে আছে। ১৪ দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর উপর আস্থা রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি অনগ্রসর মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।’
‘কেবিনেট সেক্রেটারির নেতৃত্বে কমিটি কাজ করছে আপনারা ধৈর্য ধরুন। দীর্ঘ দিনের একটা সিস্টেমকে বদল করে আনতে একটু সময় লাগে।’
সংবাদ সম্মেলন শেষে জাতীয় পার্টি-জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কোটা সংস্কারে বিষয়টির যৌক্তিক সমাধান চাই। আমরা আশা করি সমাধান পেয়ে যাব। এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া, জাসদের একাংশের সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/comsatkhira/public_html/wp-includes/functions.php on line 5664caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/comsatkhira/public_html/wp-includes/functions.php on line 5664